পঞ্চায়েত ভোটের আগে জলপাইগুড়িতে তৃণমূল নেতার বিশ্রামে যাওয়ার ঘোষণা

মকলেসার রহমান, নাগরাকাটা, ১৪ এপ্রিল : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের একাউন্ট থেকে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে ‘বিশ্রাম’ এ যাওয়ার কথা ঘোষনা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নাগরাকাটা ব্লক কমিটির সহ সভাপতি প্রেম ছেত্রী। তিনি ‘কাজী পান্ডে’ নামেই এলাকায় পরিচিত। লুকসানের ওই নেতা বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পদেও রয়েছেন। শুধু এবারেই নয়। এর আগেও ২০০৩ ও ২০০৮ এর ভরা বাম আমলেও নির্দল হিসেবে লড়াই করে তিনি পঞ্চায়েতে জিতেছিলেন।

স্বাভাবিকভাবেই লুকসান এলাকায় জনপ্রিয় ওই নেতার এমন সিদ্ধান্তে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে মুষল পর্ব শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাতে তাঁর ওই পোস্টের পর শনিবার প্রেমের লুকসানের ভুট্টাবাড়ি বস্তীর বাড়িতে তাঁর সাথে দেখা করতে যান জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের মেন্টর তৃণমূল কংগ্রেসের নাগরাকাটার অন্যতম সিনিয়ার নেতা অমরনাথ ঝা, লুকসান অঞ্চল কমিটির সভাপতি সঞ্জীব সুব্বা, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি প্রবীণ সিং ঝা সহ অনেকে।

Trinamool leader announced to rest in Jalpaiguri ahead of panchayat polls

তাঁর বাড়িতে বসেই প্রেম ছেত্রী বলেন, বর্তমানে দলে কারো সাথে কোন আলোচনা বা রেজোলিউশন না নিয়েই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। কে কোথা থেকে কি করছে বুঝে ওঠা সম্ভবপর হচ্ছে না। এভাবে দল করা যায় না। তাই বিশ্রামে যাচ্ছি। তবে কি তিনি দল বদল করতে চলেছেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, এসব নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিই নি। আমি একা নই। আমার সাথে আরো অনেকে আছেন। সবার সাথে আলোচনা করেই যা করার করবো। এখনো দলের শীর্ষ নের্তৃত্বের দিকে তাকিয়ে আছি। তাঁরা কি পদক্ষেপ করেন সেটাই আমার কাছে মুখ্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রেম ছেত্রীর এমন বসে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৃণমূল এর অন্দরে ব্যপক শোরগোল তৈরি হয়েছে। জেলা পরিষদের মেন্টর অমরনাথ ঝা বলেন, উনি পুরনো ও জনপ্রিয় নেতা। নির্দল থেকে এক সময়ে আমার হাত ধরেই কংগ্রেসে ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয়। বিশ্রাম বলে তো আর রাজনীতিতে কিছু হয় না। ওঁর ক্ষোভ ও ইচ্ছে অনিচ্ছে নিয়ে অবশ্যই দলের ভাবনাচিন্তা করা উচিৎ। তৃণমূল কংগ্রেসের লুকসান অঞ্চল কমিটির সভাপতি সঞ্জীব সুব্বা বলছেন, প্রেম ছেত্রী বসে গেলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের পক্ষে ভালো হবে না বলেই মনে করি। কি বলছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নের্তৃত্ব? নাগরাকাটা ব্লক কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, প্রেম সিনিয়ার নেতা। দলের ব্লক কমিটিতে আমার পরেই ওঁর স্থান। সুতরাং তাঁর ও তো অনেক দ্বায়িত্ব আছে। ক্ষোভের কথা দলের ভেতরেই বলা উচিৎ ছিল নয় কি? তৃণমূল কংগ্রেস এর জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি মহুয়া গোপের প্রতিক্রিয়া, ব্লক কমিটির সহ সভাপতি হিসেবে তিনিও তো জেলা কমিটির বৈঠক গুলিতে উপস্থিত থাকেন। সেখানেই নিজের কথা বলা উচিৎ ছিল। মনে রাখতে হবে আমরা প্রত্যেকেই স্রেফ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক।

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *