বাংলা বিহার সীমান্তবর্তী হরিশ্চন্দ্রপুরে একই রাত্রে দুষ্কৃতী দলের আক্রমণের শিকার ২ ব্যবসায়ী, মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর করে লুট করা হলো নগদ অর্থ, ল্যাপটপ,বোলারো গাড়ি, আটক দুই সন্দেহভজন, প্রশ্নের মুখে এলাকার নিরাপত্তা।
রাহুল মন্ডল, মালদা, ৯ই মে : একই রাতে দুই ব্যবসায়ীকে মারধর করে ছিনতাই। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনতাই নগদ অর্থ এবং বোলেরো গাড়ি, অন্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনতাই নগদ অর্থ এবং ল্যাপটপ। আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে শূন্যে গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা। লোহার রড দিয়ে মারধর। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যবসায়ী।

পুলিশের তল্লাশিতে আটক দুই সন্দেহভোজন।প্রশ্নের মুখে এলাকার নিরাপত্তা। আইন-শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ বিজেপির।পুলিশ সক্রিয় রয়েছে বলে পদক্ষেপ নিয়েছে পাল্টা তৃণমূল।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ঘটনা।হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকার ব্যবসায়ী শুভম আগরওয়াল। গতকাল রাত ২ টো নাগাদ ব্যবসার কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী কুমেদপুরে, কুমেদপুর ক্লাবের পাশে নাকা চেক পয়েন্টে তার পথ আটকায় একদল দুস্কৃতি। মাথায় আগ্নেয়স্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে তার কাছে থাকা নগদ কয়েক হাজার টাকা এবং একটি ল্যাপটপ নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। যাওয়ার সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য তারা শূন্যে গুলি চালায় বলে অভিযোগ।

ঘটনাস্থল থেকে শুভম আগরওয়াল কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। এদিকে ভোর ৫ টা নাগাদ রামসিমুল গ্রামের ব্যবসায়ী সেফিকুল আলীর গাড়ির চালক তার বোলারো গাড়ি নিয়ে কুমেদপুরের দিকে ব্যবসার কাজে যাচ্ছিল।নীলকুটি ঈদগাহের পাশে পাঁচ থেকে ছয় জন দুষ্কৃতী তাকে আক্রমণ করে। মাথায় আগ্নেয়স্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে নগদ টাকা ছিনতাই করে গাড়ি থেকে নামিয়ে বোলারো গাড়িটি নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। দুইটি ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যে দুইজন সন্দেহভজনকে আটক করেছে।তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুটি ঘটনায় একই দুষ্কৃতিদল জড়িয়ে রয়েছে কি না সেটিও খতিয়ে রাখা হচ্ছে। এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। অন্যদিকে সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। যদিও বিজেপির কথাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।

ব্যবসায়ী সেফিকুল আলী বলেন, আমার গাড়ির ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে কুমেদপুর যাচ্ছিল। পথ আজকে ওকে মারধর করে নগদ টাকা এবং গাড়ি নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃৃতীরা। আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।
আক্রান্ত গাড়ির চালক মামুন আলী বলেন, আমার মাথায় আগনেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর করেছে। আমাকে বলছিল যা আছে সবকিছু দিয়ে দিতে। ওরা সংখ্যায় বেশ কয়েকজন ছিল তাই আটকাতে পারিনি।
হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনা করে ঘটনাগুলি ঘটিয়েছে। আমরা সাথে সাথে পুলিশকে জানিয়েছি।পুলিশ খবর পাওয়া মাত্র তল্লাশি দুইজনকে আটক করেছে। সমগ্র ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়া বলেন, এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা নেই। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা কি ভাবে কাজে যাবে এরকম হলে।
প্রসঙ্গত বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসার দিক থেকে জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই এলাকা থেকে মাখনা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়।রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন সময় চেষ্টা করে অপরাধমূলক কাজ করে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার। নাকা চেক পয়েন্টের নিরাপত্তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন?এলাকা জুড়ে পুলিশের টহলদারি বাড়ানোর দাবি তুলেছে ব্যবসায়ীরা।