নিজস্ব প্রতিবেদন, জলপাইগুড়ি: দুই ফুট উচ্চতা। হাঁটতে পারে না। কিন্তু ইচ্ছাশক্তি আর মনোবলে সে পাহাড় টপকায় অনায়াসে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুন্নাজ হ্যাপি হোম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র নয়ন দত্ত—যে এবছর মাধ্যমিকে পেয়েছে ৫৫৩ নম্বর। শুধু পরিবার নয়, গোটা জেলা আজ গর্বিত তার এই অভূতপূর্ব সাফল্যে।

শুক্রবার নয়নের বাড়িতে গিয়ে ফুল, মিষ্টি ও উত্তরীয় দিয়ে সংবর্ধিত করলেন রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনীর জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির নেতারা। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক রণজিৎ কুমার রায়, সভাপতি জয়দীপ চক্রবর্তী এবং জেলা নেতা সুব্রত ভৌমিক। তাঁরা জানান, নয়নের উচ্চশিক্ষা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, তার জন্য সম্মেলনীর পক্ষ থেকে সর্বতোভাবে পাশে থাকবে তারা।

জেলার শিক্ষামহলে এখন একটাই কথা—”নয়ন দেখিয়ে দিল, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা মনের সাহসকে হার মানাতে পারে না।”
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, নিজের পায়ে হাঁটতে পারে না নয়ন। মাধ্যমিকের রেজাল্ট নিতে বন্ধুর কোলে চেপে পৌঁছেছিল স্কুলে। বন্ধু রাকেশ শর্মা যেন নয়নের ডানহাত—দুজনেই এই জয়যাত্রার অংশীদার।
এবারের মাধ্যমিকে যখন জেলার সার্বিক ফলাফলের গ্রাফ নিম্নমুখী, তখন নয়নের মতো বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রের এই পারফরম্যান্স জেলার শিক্ষা ও মনোবলের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মেলনীর এই সংবর্ধনা নয়নকে শুধু সম্মানই দিল না, বরং আরও বড় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতও করল।
জীবন যদি যুদ্ধ হয়, নয়ন তার নিঃশব্দ সৈনিক। আর এই জয় কেবল মার্কশিটের নয়—এই জয় মননের, এই জয় আশার।