উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে নয়া সমীকরণ: একসঙ্গে দুই কেপিপি; পৃথক রাজ্যের দাবি আদায়ে নয়া কমিটি

অরুণ কুমার : দীর্ঘদিনের দূরত্ব ঘুচিয়ে একজোট হল দুই গোষ্ঠী। আজ থেকে প্রায় আট বছর আগেই ভেঙে গিয়েছিল দল। রবিবার দিন তারা একত্র হয়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একজোট হলেন ধুপগুড়িতে। কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি ও কামতাপুর পিপলস পার্টি ইউনাইটেড একজোট হয়ে গঠন করলো “Kamtapur State Demand Forum”(KSDF), যার চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান নিখিল রায় ও অমিত রায়। লক্ষ্য-কামতাপুর রাজ্য ও ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায়। দীর্ঘ ৮ বছর পর (২০১৪) পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে দুই কামতাপুর পিপলস পার্টি এক ছাতার তলায় এল। যা শাসকদলকে অনেকটাই চাপে ফেলবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। একত্রে এসে পৃথক রাজ্যের দাবি আদায় সহ পঞ্চায়েত ভোটে একত্রে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি এবং কামতাপুর পিপলস পার্টি।

এ বিষয়ে দুই কামতাপুরী দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিখিল রায় ও অমিত রায় এদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা দুটি দলের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, আগামী দিনে তাদের পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে করছেন না ও সেইসঙ্গে ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন এবং আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা একত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, রবিবার দিন ধূপগুড়ির সংলগ্ন ডাউকিমারীতে গ্রামে কেপিপি ইউনাইটেড দলের সুপ্রিমো নিখিল রায়ের বাসভবনে বৈঠকে বসেন দুই কেপিপির শীর্ষ নেতারা। সেখান থেকে তাঁরা কামতাপুর স্টেট ডিমান্ড ফোরাম তৈরি করেন। এই ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন কামতাপুর পিপলস পার্টির সুপ্রিমো নিখিল রায় এবং ভাইস চেয়ারম্যানের পদে নির্বাচিত হন কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির সভাপতি অমিত রায়। এছাড়াও এই কমিটির চারজন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, নারায়ণচন্দ্র রায়, উত্তম বর্মন, প্রদীপ কুমার রায় ও সুভাষ বর্মন।

আরও জানা গিয়েছে, এদিন ধুপগুড়িতে কামতাপুর পিওপলস পার্টির নেতা নিখিল চন্দ্র রায়ের বাড়িতে কামতাপুর প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতারা মিলে এক আলোচনায় সভায় বসেন।উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র আন্দোলন তথা পৃথক কামতাপুর রাজ্য ও ভাষার দাবীদার দুই রাজনৈতিক দলের এই আলোচনা সভা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ । অতুল রায় মারা যাবার পর কামতাপুর প্রগ্রেসিভ পার্টির হাল ধরেন তার ছেলে অমিত রায়। কিন্তু বছর খানেক না ঘুরতেই অমিত রায়ের লিডারশিপ না মানতে পেরে অনেকে হেভিওয়েট নেতা নেত্রীরা দল থেকেব বের হয়ে আসেন।তাতে কামতাপুর প্রগ্রেসিভ পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়ে অমিত রায়ের দল। বেশির ভাগ নেতা নেত্রীরা বের হয়ে যাওয়াতে অমিত রায়ের শক্তিও যেন অনেকটা কমে যায়। অপরপক্ষের দলের সভাপতি পদে স্বর্গীয় অতুল রায়ের দাদা অধীর চন্দ্র রায় আসীন হন। জ্যাঠা এবং ভাইপোর রাজনৈতিক লড়াই ছিলো চোখে দেখার মত।অনেকটা কোনঠাসা অবস্থা থেকে দলকে টেনে নিতে আজ কামতাপুর পিওপলস পার্টির সাথে আলোচনা করে দুই দল মিলে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের জন্য ” কামতাপুর স্টেট ডিমান্ড ফোরাম” গঠন করেন।যার সভাপতি নির্বাচিত হন নিখিল চন্দ্র রায় আর সহ সভাপতি হন অমিত রায়। এই দুই দলের আঁতাতে রাজনৈতিক সমীকরণ কোন দিকে গড়ায় এটাই এখন দেখার অপেক্ষায় উত্তরের ভূমিপুত্র থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *