৬ কোটি টাকা খরচ; তবু এক ফোঁটা জল নেই! রিজার্ভার থাকলেও তৃষ্ণার্ত খারিজা বেরুবাড়ির দুই গ্রাম

জলপাইগুড়ি: ২০১৬ সালে আশার আলো দেখিয়েছিল এক প্রকল্প। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে সিপাইপাড়া এলাকায় তৈরি হয় আধুনিক রিজার্ভার। লক্ষ্য ছিল—খারিজা বেরুবাড়ি অঞ্চলের দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের বাড়িতে পৌঁছে যাবে বিশুদ্ধ পানীয় জল। পাতা হয় পাইপলাইন, তৈরি হয় সরবরাহের পরিকাঠামো। কিন্তু বছর ঘুরতেই স্বপ্নে চিড় ধরে।

আজও সেই রিজার্ভার আছে, কিন্তু জলের স্রোত নেই। পাইপলাইন পড়ে আছে কিন্তু তা এখন মাটি আর মরচে ধরা জালের মতো। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে জল সরবরাহ ব্যবস্থা। ফলে গ্রামের বাসিন্দাদের এখনো হেঁটে যেতে হয় মাইলের পর মাইল, কাঁধে কলসী তুলে জল আনতে।

খারিজা বেরুবাড়ির এক বাসিন্দার কথায়, “রিজার্ভারটা যেন চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক উপহাস। আছে, কিন্তু নেই। এত টাকা খরচ হল, অথচ জল জোটে না!”

এই সমস্যা নতুন নয়। বছরের পর বছর ধরে একই অবস্থা। বর্ষা এলে কিছুটা স্বস্তি মিললেও গ্রীষ্মের খরায় গ্রাম যেন পানীয় জলের মরুভূমিতে পরিণত হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সকলেরই প্রাত্যহিক জীবনে জলের জন্য লড়াই যেন রোজকার যুদ্ধ।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। মেরামতির কাজও পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—যেখানে রিজার্ভার আছে, পরিকাঠামো ছিল, সেখানে জল নেই কেন? কে নেবে এই দায়িত্ব?

এই দুর্দশার ছবি শুধু খারিজা বেরুবাড়ি নয়, গোটা রাজ্য জুড়েই এমন বহু প্রকল্প পড়ে আছে অচল অবস্থায়—যেখানে কাঠামো আছে, কিন্তু মানুষের হাতে কিছুই নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *