আলাদা কিছু করে দেখাবার বাসনায়

প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু শখ বা হবি থাকে। কেউ ভালোবাসেন ডাকটিকিট সংগ্রহ করতে, আবার কেউবা দিয়াশলাইয়ের বাক্স জমাতে ভালোবাসে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা আর দশজনের থকে কিছু আলাদা করতে ভালোবাসেন, যাদের শখের কথা জেনে বিস্মিত হতে হয়। তেমনই কিছু বিস্ময়কর শখের মানুষদের কথা লিখেছেন—পিনাকী রঞ্জন পাল।

ছবি প্রতীকী

ক্যালিফোর্নিয়ার জেভিয়ার জাপাটার শখ হল সাইকেল চালিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা। ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে লম্বা বাড়িতে ৯৪৩টি ধাপ সাইকেলে উঠে তিনি বিশ্বরেকর্ড করেছেন। ওঠার সময় জেভিয়ার একবারও মাটিতে অর্থাৎ সিঁড়ির ধাপে পা রাখেননি।

ক্যালিফোর্নিয়ারই ডাঃ রোনাল্ড এল এল্কানার শখ হল কলা খাওয়ার। একবার তিনি ‘ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে’ মাত্র দুই মিনিটে ১৭টি কলা খেয়ে সকলকে বিস্মিত করে দিয়েছিলেন।

নরওয়ের জন সোলবার্গ ভিন্ন ভিন্ন দেশের বিয়ারের বোতলের লেবেল সংগ্রহ করে থাকেন। এখনো পর্যন্ত জন ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৬০০টি লেবেল সংগ্রহ করেছেন।

ছবি প্রতীকী

শুল্ক দপ্তরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট সুরিন্দর সিং আজাদ-এর শখ হল শুধুমাত্র ফোর্থ গিয়ারে স্কুটার চালানো। ১৯৭৯ সালে ৫৩৪ কিমি পথ অতিক্রম করেন তাঁর স্কুটার একেবারে টপ গিয়ারে রেখে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাথলিন লিন্ডসের হবি হচ্ছে উপন্যাস লেখা। এখনো পর্যন্ত ক্যাথলিন ১০৪টি উপন্যাস লিখেছেন।

ভারতের মহারাষ্ট্রের বাবুরাও আনলিকরের শখ হচ্ছে ছোটগল্প সংকলন লেখার, আর এখনো পর্যন্ত তার এক হাজারের বেশি ছোট গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়েছে।

ছবি প্রতীকী

আমেরিকার জ্যাক দম্পতির নেশা ছিল পরস্পরের সঙ্গে বারবার বিবাহ করার। এই শখ পুরণে ৪০ বার জ্যাক এবং তার স্ত্রী এডনা পরস্পরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।

পিছন দিকে দৌড়াবার শখ রয়েছে ভারতের অরবিন্দ পান্ডিয়ার। ১৯৮৪ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১০৭ দিনে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত পিছন থেকে দৌড়েছিলেন।

আমেরিকার আর এঙ্গিলার বিভিন্ন ধরনের টাকা জমাবার শখ রয়েছে। তার কাছে ভিন্ন ভিন্ন দেশের ১৭৩ ধরনের টাকা আছে। তিনি এই টাকা সংগ্রহ শুরু করেছিলেন ১৯৬৫ সাল থেকে।

ভারতের পুনের শ্রীধর চিল্লাই-এর শখ হল নথ বড় করার। ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ মাপ নিয়ে দেখা যায় তার বাঁ হাতের পাঁচ আঙুলের নথের দৈর্ঘ্য হল গড়ে ৪৫২.৫ সেমি (বুড়ো আঙুলের (১০২.৫ সেমি) ১৯৫২ সালে উনি শেষবার নখ কেটেছিলেন।

তামিলনাড়ুর তাঞ্জোরের তিরুভাদুতুরাই মঠের প্রধান স্বামী পান্তারাসান্নধির শখ হল চুল বড় করার। ১৯৪৯ সালে তাঁর চুলের দৈর্ঘ্য ছিল ২৬ ফুট (৭.৯২ মিটার)।

নরওয়ের হ্যান্সে এন ল্যান্সেটা এর শখ ছিল দাড়ি বড় করবার। তার দাড়ি ৫৩৭ সেমি পর্যন্ত লম্বা ছিল।

উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলার ব্রাহ্মণ মাসুরিয়া দিন এর হবি ছিল গোঁফ বাড়াবার। বিশ্বের দীর্ঘতম গোঁফের অধিকারী মাসুরিয়ানর গোঁফের দৈর্ঘ্য ছিল ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি বা ২৫৯ সেমি।

আমেরিকার অ্যালেন ডাস্টার ভালোবাসতেন রক্তদান করতে। অ্যালেন কুড়ি বছরে প্রায় ৮৭ লিটার রক্তদান করেছেন।

কানাডার এক মহিলার শখ ছিল আজেবাজে জিনিস খাওয়ার। একবার পেটেব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে ডাক্তাররা অপারেশন করে তার পেট থেকে ২,৫৩৩টি জিনিস বার করে, যার মধ্যে ৯৪৩টি বাঁকা পিনও ছিল।

ইংল্যান্ডের উইলফ্রেড হার্ডির শখ ছিল নিজের শরীরে উল্কি আঁকার। উইলফ্রেড তার সমস্ত শরীর, এমনকী গালের ভেতরে, জিভে, মাড়িতেও উল্কি এঁকেছিল।

আমেরিকার জেসমি হাট রাসভেল এর শখ ছিল বিশ্বভ্রমণের। পেশায় অধ্যাপক রাসভেলের লক্ষ্য ছিল ২১৫টি দেশ ভ্রমণ করার, কিন্তু ২১৩টি দেশের ভ্রমণ তিনি শেষ করতে পেরেছিলেন। তারপরই তাঁর মৃত্যু হয়।

ফোয়ারায় স্নান করার শখ হয়তো অনেকেরই আছে। তবে আমেরিকার কেবিন মেক কার্টনিকো লাগাতার ৩৪০ ঘন্টা ফোয়ারা স্নান করে রেকর্ড করেছিলেন।

ছবি প্রতীকী

আমেরিকান ম্যাক্স বকের শখ হচ্ছে। নিজের শরীরে মৌমাছি পালন করা। ম্যাক্স নিজের শরীরে প্রায় ৭০ হাজার মৌমাছি একসঙ্গে পালন করতেন।

Photo credit pixel

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *