প্রার্থী তালিকায় তার নাম না থাকা নিয়ে কি বললেন দুলাল দেবনাথ

এবারের প্রার্থী তালিকায় নাম না ওঠার পরেও আইপ্যাককে ধন্যবাদ, শহরের দলীয় নেতাকে পাশে বসিয়ে তৃণমূলের বিজয় প্রার্থনা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ সভাধিপতির। বিচক্ষণ রাজনৈতিক নেতার আখ্যা বিজেপির।

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃনমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলাতেও চলছে নানান সমীকরণ। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে যারা এবারে টিকিট পাননি তাদেরই একজন হলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ। একদিকে তিনি যেমন প্রশাসনিক পদ সামলেছেন পাঁচ বছর, তারই সঙ্গে কিষান খেত মজদুর তৃনমূল কংগ্রেস সংগঠণের জেলা সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। এমন একজন প্রবীণ দক্ষ রাজনৈতিক নেতার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার বিষয়টি দলেরই একাংশ মেনে নিতে না পারলেও দুলাল বাবু দলের এই সিদ্ধান্তে যে সহমত তা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বৃহস্পতিবার দুলাল বাবুর শহরের বাড়িতে পৌঁছলে দেখা যায় দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী তথা জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সদস্য সন্দীপ মাহাতো ছুটে এসেছেন দুলাল বাবুর বাড়িতে। এই প্রসঙ্গে সন্দীপ বাবু জানান, দুলাল বাবু তৃনমূল দলের অনেকগুলো শাখা সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন। আমি আশা করবো উনি টিকিট না পেলেও দলের প্রতি আনুগত্য রেখে পূর্বের মতই তৃনমূল কংগ্রেসের হয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করে যাবেন।

What Dulal Debnath said about his name not being in the candidate list

যদিও তৃনমূল দলের প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকার বিষয়টিকে নিজের রাজনৈতিক দক্ষতা দিয়ে অনেকটাই চাপা দিতে পারলেও কিছুটা দুঃখ, হতাশা অবশ্যই প্রকাশ পেয়ে গেল সদাহাস্য প্রানবন্ত এই মানুষটির বর্তমান মুখমণ্ডলে। দলীয় প্রার্থী না হওয়ার কারন হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং আমাদের নেত্রী স্বয়ং মহিলা। মহিলাদের জন্য পঞ্চাশ শতাংশ আসনও নির্দিষ্ট। আমি গতবার যে আসনে জিতে জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি হয়েছিলাম এবার সেই আসনে তৃনমূল কংগ্রেস দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী নিজেই প্রার্থী হয়েছেন। তবে প্রার্থী না হলেও মনোনয়নের ব্যাপারে তিনিও বিভিন্ন বক্লের নেতৃত্ব এবং কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে জানান বর্ষীয়ান তৃনমূল নেতা দুলাল দেবনাথ। পাশাপাশি নিজের নাম প্রার্থী তালিকায় স্থান না পেলেও, এবারের প্রার্থী তালিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা আইপ্যাককে ধন্যবাদ জানিয়ে দুলাল বাবু বলেন, খুব সুন্দর তালিকা প্রস্তুত হয়েছে জেলায় এবং তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা বিপুল সংখ্যক মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে জয়ী হবে।

অপরদিকে দুলাল বাবুর মতো দক্ষ রাজনৈতিক নেতা টিকিট না পাওয়ার বিষয়টিকে তৃনমূল দলের নিজস্ব ব্যাপার বললেও, এমন পরিস্থতি যে হতে পারে সেটি দুলাল বাবুর মতো পোড়খাওয়া, দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতা বুঝেছিলেন এমনটাই দাবী করলেন বিজেপির টাউন মণ্ডলের অন্যতম নেতা সৌজিত সিংহ। এই প্রসঙ্গে সৌজিত বাবু বলেন, দুলাল বাবু হয়তো আগেই বুঝতে পেরেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট তাকে নাও দিতে পারে তৃনমূল। সেই কারনেই হয়তো বিগত কয়েক মাস আগে থেকেই দুলাল বাবু কখনো বিজেপি, কখনো সিপিএম আবার কখনো কংগ্রেসের প্রবীণ নেতৃত্বের বাড়িতে ছুটে যেতেন সামাজিকতা বজায় রাখার দৃষ্টিভঙ্গিকে হাতিয়ার করে। তবে দুলাল বাবু যে এই জেলার অন্যতম একজন বিচক্ষণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সেটি মেনে নেন গত বিধানসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি সদর আসনে বিজেপির হয়ে লড়াই করে পরাজিত হওয়া সৌজিৎ বাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *