সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৩ সেপ্টেম্বর’২৩ : জলপাইগুড়ি শহরে টোটোর ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে, সেইসাথে অতিরিক্ত টোটোর যানজটে নাকাল শহরবাসী। পুরসভা দীর্ঘদিন ধরেই এইসব সমস্যার সমাধান করবে, করবে করেও এখনো পর্যন্ত করে উঠতে পারে নি। টোটো চালকদের দাবি মেনে একতরফাভাবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে হঠাৎই পুর সরকার জলপাইগুড়ি পুর এলাকায় টোটোর ন্যুনতম ভাড়া ১০ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ টাকা করে দেয়। এরপর পুর নাগরিকদের প্রতিবাদে ফের টোটোর ন্যুনতম ভাড়া ১০ টাকা করা হয়। তবে কিমি প্রতি এই ভাড়া নির্ধারিত হওয়ায় দূরত্ব নিয়ে টোটো চালকদের সাথে যাত্রীদের বচসা লেগেই আছে এবং এক শ্রেণীর টোটো চালকরা ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। কারণ পুরসভা জানিয়েছিল যে তারা দূরত্ব অনুযায়ী গলি গলি ধরে ভাড়ার চার্ট তৈরি করে দেবে। কিন্তু সেই চার্ট এখনো টোটো চালকদের হাতে এসে পৌঁছায় নি। যদিও পুর নাগরিকদের অধিকাংশের মত, ভাড়া নিয়ে বিবাদ মেটানোর জন্য টোটোতে ভাড়া মিটার লাগানো বাধ্যতামূলক করা উচিত। তাহলেই কিমি প্রতি ভাড়া বিবাদের সুষ্ঠু মীমাংসা হবে। কিন্তু পুরসভা তার সাবেকি চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে ভাবতে পারেনি। তারা জানিয়েছে, পুর এলাকার গলি গলি ধরে কিমি নির্ধারণ করে ভাড়ার তালিকা টোটো চালকদের তুলে দেওয়া হবে। সেই সাথে শহরে টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যাতে যানজট কমানো যায়। শহরের টোটো শহরে চলবে, আর বাইরের টোটোর শহরে ঢোকা আটকাতে দশটি গেট করা হবে। শহরের টোটো চালক ছাড়াও শহর লাগোয়া অরবিন্দ, পাতকাটা, খড়িয়া ও পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টোটো মিলিয়ে প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টোটোকে শহরে চলাচল করতে দেওয়া হবে। আর তাদের চিহ্নিত করতে তাদের দেওয়া হবে বারকোড যুক্ত আই কার্ড, টিন নাম্বার। শহরে টোটো চালাতে গেলে টোটো চালকদের করতে হবে রেজিস্ট্রেশন। কিন্তু এই রেজিস্ট্রেশন ফি দিতেও অনীহা দেখা যাচ্ছে অনেক টোটো চালকদের মধ্যে। যদিও টোটো চালকদের তাদের টোটোর ব্যাটারি চার্জ করতে কমার্শিয়াল বিদ্যুতের চার্জ দিতে হয় না, ডোমেস্টিক বিদ্যুতের লাইনেই তাদের টোটোর ব্যাটারি চার্জ হয়।

টোটোর সমস্যা নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি কথা বলেছিলেন জলপাইগুড়ির পুরমাতা পাপিয়া পালের সাথে। তিনি জানান, টোটোর রেট চার্ট ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়ে গেছে। পুরমাতা আরো বলেন, রেট চার্জ, রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর দেওয়া সহ যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

যেহেতু দুয়ারে সরকার চলছে, তাই আমাদের আধিকারিকরা সেইসব কাজে একটু ব্যস্ত রয়েছেন। দুয়ারে সরকার শেষ হলেই কিছুদিনের মধ্যেই টোটো সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান। যারা এখনো রেজিস্ট্রেশন করেননি তাদেরও পুরসভায় এসে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। টোটো সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে খুব দ্রুতই শহরে মাইকিং করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুরমাতা পাপিয়া পাল।
তবে এই কাজ কবে পুরোপুরি সম্পন্ন হবে এবং কবে শহরে যানজট নিরসনে টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায় নি।