সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১০ নভেম্বর : বৃহস্পতিবার সকালে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় এসে মিড ডে মিলের রাঁধুনি ও সাফাই কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ।
অভিযোগ, মিড ডে মিলের রাঁধুনি ও পুরসভার সাফাই কর্মীরা মিলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে। অন্যদিকে সাফাই কর্মীদের অভিযোগ, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তাদের এক কর্মীকে ধাক্কা মেরেছেন। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

ছাত্রীদের অভিভাবকরা থানায় দাঁড়িয়ে জানালেন, স্কুলের রাঁধুনীরা মেনু অনুসারে খাবার তৈরি করেন না। পড়ুয়াদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। অভিভাবকরা জানান, রাঁধুনীদের কাজ থেকে না সরালে তারা স্কুলে বাচ্চাদের পাঠাবেন না। তারা অভিযোগ করেন, আজ রাঁধুনীরা সাফাই কর্মীদের এনে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সরিতা চৌধুরী কে হেনস্থা করে। প্রধান শিক্ষিকা কে নিয়ে থানায় আসার পথে তাদের গায়েও হাত তোলা হয় বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।

উল্লেখ্য, কিছু বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জটিলতা চলছে জলপাইগুড়ি মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সরিতা চৌধুরি বলেন, রাধুনিরা সাফাই কর্মীদের দিয়ে আমাকে হেনস্থা করেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, রাঁধুনিরা অনেকদিন ধরেই স্কুলের বিভিন্ন কাজে অনিয়ম করছে। ওদের কাজটা ওরা ঠিকমতো করছে না। বাচ্চাদের সাথে অমানবিক ব্যাবহার করে। মানসিক অত্যাচার করে। সেজন্য অভিভাবকরা আমাকে সবসময় অভিযোগ করেন। আমি বলতে গেলে আমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করে। ওরা আমাকে স্কুল ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমি অনেক অপমানিত হয়েছি। কিন্তু আমি শুধু আছি আমার বাচ্চারা আর অভিভাবকদের জন্য। এরা আমাকে যেতে দিচ্ছে না। ওরা বাচ্চাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল নিয়ে যায়। আর পরে বলে চাল কম হয়েছে। আজ চাল নিতে এলে আমি চাল দেওয়ার সময় ভিডিও করতে শুরু করি। ওরা সেটা দেখতে পেয়ে ব্যাগ ফেলে ওরা বলে রান্না করবো না। এই নিয়ে বচসা হয়। রাঁধুনিরা স্কুল ছেড়ে চলে যায়। আমি গেট আটকে বসে থাকি বাচ্চাদের নিয়ে। পরে তারা অনেক সাফাই কর্মীদের নিয়ে আসে। তারা জোরে জোরে গেটে ধাক্কা দিয়ে গেট খুলতে বলে। বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়। আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেন। তারপর ছুটির সময় অভিভাবকরা এসে আমাদের উদ্ধার করে এবং বিষয়টি শুনে আমাকে মাঝখানে রেখে থানায় নিয়ে আসে। আসার পথে আমাদের দিকে ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে আসে সাফাই কর্মীরা। অভিভাবকদের গায়ে হাত তোলে বলে অভিযোগ করেন সরিতা দেবী।

অন্যদিকে জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্য সন্দীপ মাহাত এ নিয়ে বলেন, নোংরা ফেলা নিয়ে স্কুলের টিচার ইনচার্জ ও পুরসভার সাফাই কর্মীদের সাথে বচসা হয় এবং পরবর্তীতে আমাদের এক কর্মরত স্টাফকে ধাক্কা দেওয়া হয়। তারপর সব মহিলা সাফাই কর্মীরা একত্রিত হয়ে ওই শিক্ষিকা কে বলেন তিনি এমনটা কেন করলেন। সাফাই কর্মীরা নিজেরাও থানায় একটা এফআইআর করেছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে আমরাও একটা এফআইআর করেছি।সন্দীপ বাবু বলেন, শিক্ষিকার অভিযোগ ভিত্তিহীন।