ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে হাতির আক্রমণে মৃত্যু যুবকের; ক্ষোভে ফুঁসছে খটখটি ঘাট

জলপাইগুড়ি, বৃহস্পতিবার: একদিকে ছিল পায়ের ব্যথা, অন্যদিকে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার তাড়া—কিন্তু কে জানতো সেই পথই হয়ে উঠবে মৃত্যুর ফাঁদ! জলপাইগুড়ি জেলার বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া টাকিমারি চরের খটখটি ঘাট এলাকায় বুধবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনায় এক আদিবাসী যুবক বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ হারালেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা গ্রাম। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মৃত যুবকের নাম রাজেশ ওরাও (প্রায় ৩০)। জানা গিয়েছে, তিনি সদ্য কেরালায় কাজ করে বাড়ি ফিরেছিলেন। পায়ের পুরনো সমস্যার জন্য ওইদিন সকালে এক আত্মীয়ের বাইকে চেপে শিলিগুড়ি ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই আচমকা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে একটি বুনো হাতি। বাইক থামিয়ে নেমে পড়তেই রাজেশকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে ওই হাতিটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

Young man dies after being attacked by elephant on way to see doctor

এই ঘটনার পর পরই উত্তেজনায় ফেটে পড়ে এলাকা। বন দফতরের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষ যাতায়াত করেন, অথচ বন দফতরের পক্ষ থেকে নেই কোনও স্থায়ী টহল বা সতর্কতা ব্যবস্থা। এমনকি বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও গ্রামে হাতি তাণ্ডব নিয়ে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা নন্দ দাস বলেন, “সকাল ন’টার সময় ঘটনা ঘটেছে। অথচ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রাজেশের ক্ষতবিক্ষত দেহ ধানক্ষেতে পড়ে ছিল। বন বিভাগের কর্মীরা কিছু না করেই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। প্রতিদিন প্রায় একশো হাতি জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকে চাষের ক্ষতি করছে, মানুষের প্রাণ যাচ্ছে—তবুও কোনও প্রতিকার নেই।”

অন্যদিকে, গ্রামবাসী অনুকূল গাইন জানান, “আজ সকালেই আমরা রেঞ্জ অফিসে একটি ডেপুটেশন দিয়েছিলাম হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে। সেই সময়েই খবর এল রাজেশের মৃত্যুর।”

ঘটনার পর রেঞ্জ অফিসে নতুন করে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে এলাকায় টহল, নজরদারি এবং হাতি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *