জলপাইগুড়ি, ১০ জুলাই: বর্ষার রাতে গজলডোবার জঙ্গলের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির ভেতর রাজনৈতিক আলোচনার বদলে দেখা গেল অন্য চিত্র—রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের দুই নেতানেত্রী মদ্যপানে মত্ত! ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতেই ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য, যা ঘিরে ইতিমধ্যেই তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় এবং বিজেপির মহিলা মোর্চার জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী দীপা বণিক একটি গাড়ির ভেতরে বসে রয়েছেন, পাশে রাখা রয়েছে মদের গ্লাস। রাতের অন্ধকার, জঙ্গলের নীরবতা, আর গাড়ির ভিতরে ‘রোড সাইড পার্টি’—এই মিলিত ছবি দেখে স্তম্ভিত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল। যদিও জলপাইগুড়ি নিউজ এই ভিডিওর সত্যতা স্বতঃসিদ্ধভাবে যাচাই করেনি।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শহর ব্লক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অম্লান মুন্সি সরাসরি তৃণমূল ও বিজেপির গোপন আঁতাতের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “দিনে পথে নামে, আর রাতে ভাগাভাগি করে নেয় সুবিধা—এই ভিডিও সেটাই প্রমাণ করছে। অনেকদিন ধরেই এই দুটি দলের মধ্যে বোঝাপড়ার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।”

তৃণমূল কংগ্রেসের শহর ব্লক সভাপতি তপন ব্যানার্জিও বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, “যেই দলেরই হোক, এমন কাজ অনুচিত। সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যায়।”

বিজেপির প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি অলক চক্রবর্তী এ ঘটনাকে ‘ব্যক্তিগত’ আখ্যা দিলেও জানান, “রাতের অন্ধকারে এইভাবে শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাখা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বই বিবেচনা করবেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ঘিরে চর্চা তুঙ্গে। ভোটের আগে যখন দুই পক্ষ রণনীতি সাজাতে ব্যস্ত, তখন এই ভিডিও কোথাও গিয়ে উভয় দলেরই ভাবমূর্তি প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলেছে।
এখন দেখার বিষয়, দলীয় স্তরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় এই ‘রাতের বন্ধুত্ব’ নিয়ে। রাজনীতির প্রকাশ্য যুদ্ধের আড়ালে গোপন আঁতাতের এই অভিযোগ আগামী দিনে আরও জল ঘোলা করতে পারে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।