নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১২ মার্চ ২০২২ : সাবধান, জলপাইগুড়ি শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছিনতাইবাজদের দল। শহরে দিনে দুপুরে ঘটছে টাকা ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। জলপাইগুড়ি শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে? শহরের বিভিন্ন ব্যাংকগুলোর সামনে কি সক্রিয় এই দুস্কৃতিরা? অন্তত শুক্রবার জলপাইগুড়ি শহরের বেগুনটারি মোড় সংলগ্ন এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গ্রাহকের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা এমনটাই ইঙ্গিত বহন করে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে বেগুনটারি এলাকার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এসে ষাট হাজার টাকা তোলেন এবং পিঠে থাকা ব্যাগে রাখেন দশরথ দাস। দশরথ বাবু দাস পাড়া ফার্মারস ক্লাবের সম্পাদক তথা কৃষক। তিনি ফার্মারস ক্লাবের বিভিন্ন কাজে খরচের জন্য ওই টাকা তুলেছিলেন। এরপর ব্যাংক থেকে বেরিয়ে রাস্তার অপরদিকে রাখা নিজের বাইক নিতে গেলে একজন যুবক ডেকে দশরথ বাবুকে বলেন একটু দাঁড়ান রুমাল পরে গেছে। এরপর ওই যুবক একটি রুমাল রাস্তা থেকে তোলার পর বলে, আপনার গায়ে এত নোংরা লেগে আছে কেন? যুবকের কথায় দশরথ বাবু লক্ষ করেন তার জামায় জলে ভেজানো মুড়ি বা বিস্কুটের গুঁড়োর মতো কোনো কিছু লেগে আছে। মনে হয় কেউ পেছন থেকে ঢেলে দিয়েছে। তিনি এই নোংরা কোথা থেকে তার জামায় লাগলো চারিপাশে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। কিন্তু বুঝতে পারেন না কোথা থেকে লাগলো। তিনি ব্যাংকের টয়লেটে গিয়ে নিজেকে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। জলপাইগুড়ি শহরে তার আরো কিছু কাজ বাকি ছিল, যা এই নোংরা শার্ট পরে করা সম্ভব নয়। তাই তিনি নতুন জামা কেনার জন্য ব্যাগ থেকে টাকা বার করতে গিয়ে দেখেন পিঠের ব্যাগে রাখা ষাট হাজার টাকা নেই। তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি ছিনতাইবাজদের খপ্পরে পড়েছিলেন এবং তারাই তার এই সর্বনাশটি করেছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে দশরথ বাবুর। তিনি এরপর ব্যাংকে গিয়ে বিষয়টি জানান এবং ব্যাংক ও ওই এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে একজন যুবক তার পিঠের ব্যাগ থেকে টাকা বার করে নিজের পকেটে রাখছে। তিনি বুঝতে পারেন রুমাল তোলা যুবক আর ওই টাকা বার করা যুবক দুইজন মিলেই এই কাজ করেছে। সিসি ক্যামেরায় ওই ছিনতাইবাজদের মুখ পরিষ্কার দেখা গেছে বলে দাবি দশরথ বাবুর। এরপরেই ষাট হাজার টাকা ছিনতাইবাজদের হাতে খোয়ানো দশরথ বাবু শনিবার জলপাইগুড়ি কোতয়ালী থানার দ্বারস্থ হন। তিনি নিজের খোয়ানো টাকা ফেরতের পাশাপাশি এই ধরনের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।