অরুণ কুমার : নিজের আবাসনে বেড রেস্টে রয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাচ্ছেন ওষুধ। এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে ১৭ দিন কাটিয়ে গত শুক্রবার চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে ফিরেছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অণ্ডকোষের সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। এদিকে জানা গেছে সোমবার থেকে আবার তিনি ভীষণ অসুস্থ। তবে কি ফের হাসপাতালে ভর্তি হবেন কেষ্ট মণ্ডল? এই প্রশ্ন ঘুরছে বীরভূম থেকে কলকাতা পর্যন্ত।

সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে এসেছিলেন অনুব্রতর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ। তিনি ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তা অনেকটা এরকম। তিনি জানিয়েছেন, শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ অনুব্রত মণ্ডল। তাই আবারও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। তবে কি আবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন অনুব্রত? এই প্রশ্নের সরাসরি কোনও জবাব দেননি অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী। তবে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরেই সিবিআই ফের অনুব্রতকে জোড়়া তলব করেছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি হাজিরা দিতে যাননি। আপাতত চার সপ্তাহের জন্য রেস্টে আছেন অনুব্রত। তবে কি ফের তলবের সম্ভাবনা জোরালো হতেই আবার হাসপাতালমূখী হতে চান বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা? এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে এবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, জেলে না গেলে তাঁকে হাসপাতালে মেরে ফেলা হতে পারে।

যদিও অনুব্রত মণ্ডলকে মেরে ফেলার ভবিষ্যতবাণী বিজেপি নেতার এটাই প্রথম নয়। সপ্তাহ খানেক আগে বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের মুখেও দিলীপ ঘোষের মতো মন্তব্য শোনা গিয়েছিল। তিনি তো সরাসরি মুখ্য়মন্ত্রীকে তোপ দাগেন। বনগাঁয় এক জনসভা থেকে তিনি বলেন, “বগটুই গ্রামে ১০ জনকে তেল ঢেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আর সেই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড পেট ফুলিয়ে উডবার্ন ওয়ার্ডে শুয়ে রয়েছে। তিনি যদি ভাবেন উডবার্ন ওয়ার্ডে শুয়ে বেঁচে যাবেন, তা সম্ভব নয়। আগামী দিনে হয় সিবিআই-এর দরজায় যেতে হবে। নাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষাক্ত ইঞ্জেকশনে মরতে হবে।”
এপ্রসঙ্গে অনুব্রতর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ -কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। কোনরকম বিতর্কে যেতে নারাজ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “পলিটিকাল কোনও মন্তব্য করব না।” দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কি আইনি কোনও পদক্ষেপ করা হবে এই প্রশ্নের আইনজীবীর ছোট্ট জবাব, “দলের থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি।” অর্থাৎ দলের নির্দেশ এলেই দিলীপ ঘোষের বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন সঞ্জীব দাঁ। এখন দেখার বিষয় আগামী দিনে এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে নামে নাকি আইনগতভাবে এর জন্য আমাদের কিছুদিন হয়তো কোথাও করতে হবে। অনুব্রত মণ্ডল শেষ পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে ভর্তি হবেন নাকি রেস্টে থাকবেন ফ্ল্যাটে সেদিকেই নজর রয়েছে বিভিন্ন মহলের।
Photo source- Anubrata Mandal official FB page.