জলপাইগুড়ি, ১০ জুলাই: গরুমারা জাতীয় উদ্যানের সীমানার একেবারে কাছেই, মহাকাল এলাকায় সম্প্রতি দেখা যায় কেন্দ্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত রটউইলার জাতের একটি কুকুরকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াতে। ঘটনাটি প্রথম নজরে আসে পর্যটকদের, যারা বিষয়টি রাতেই পরিবেশ সংরক্ষণমূলক সংগঠন SPOAR-এর কাছে জানায়।

গরুমারা জঙ্গলে চিতাবাঘের উপস্থিতি খুব বেশি, এবং তাদের অন্যতম সহজ শিকার হয়ে উঠতে পারে একটি পরিত্যক্ত পোষ্য। কিন্তু সমস্যা শুধু শিকারে সীমাবদ্ধ নয়—এই ধরনের কুকুর যদি ডিসটেম্পার, পারভো বা রেবিস-এর মতো মারণ ভাইরাসের বাহক হয়, তবে তা সরাসরি সংরক্ষিত বন্যপ্রাণীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। সংক্রমণের আশঙ্কায় বিপন্ন হতে পারে পুরো জঙ্গল পরিবেশ।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে SPOAR-এর তরফে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা হয় গরুমারা ডিভিশনের অতিরিক্ত বিভাগীয় বনাধিকারিক নিভা শেরপা-র সঙ্গে। তাঁর সক্রিয় সহায়তায় ও বনকর্মীদের যৌথ উদ্যোগে, SPOAR-এর দল দ্রুত কুকুরটিকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে।

পরে SPOAR কুকুরটির দেখভাল ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং ঘটনার একটি সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করে প্রশাসনের কাছে।
SPOAR-এর সিইও শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানায় পোষ্য পরিত্যাগ শুধু অমানবিকই নয়, চরম বিপজ্জনকও। এটি বন্যপ্রাণীর স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্রের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সকল নাগরিকের কাছে আবেদন করছি—এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকুন।”
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এ যেন এক নিঃশব্দ যুদ্ধ—যেখানে সচেতনতা আর দ্রুত প্রতিক্রিয়াই পারে বড় বিপদ আটকাতে। গরুমারার সীমান্তে SPOAR ও বনবিভাগের এই তৎপরতা সেই উদাহরণ হয়ে রইল।