জলপাইগুড়িতে পুর ভোটে ছাপ্পা ভোট, বুথ জ্যাম, মারপিটের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি ঃ- জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভার ৫৭টি ওয়ার্ডে রবিবার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মোট ১১১টি বুথ ও ময়নাগুড়িতে ১৭টি ওয়ার্ডের ৩২টি বুথে এবং মালবাজারে ১৫টি ওয়ার্ডের ২৮টি বুথে ভোট গ্রহণ হয় ৷ জলপাইগুড়ি পুরসভার মোট ভোটার ৮৯২১৮ (পুরুষ ৪৩০১২, মহিলা ৪৬২০৬) জন। ময়নাগুড়ি পুরসভার মোট ভোটার ২৪৪০৩ ( পুরুষ ১২০০১, মহিলা ১২৪০২) জন এবং মালবাজারের মোট ভোটার ২১৮৯২ (পুরুষ ১০৭৪৭, মহিলা ১১১৪৫) জন। জলপাইগুড়ি পুরসভার মোট ৮২জন, ময়নাগুড়ি পুরসভার ৫৭জন এবং মালবাজার পুরসভার ৪৬জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হয় আজ ৷ আগামী ২রা মার্চ জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির ভোট গননা হবে জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়ে । অন‍্যদিকে মালবাজার পুরসভার ভোট গননা হবে মাল আদর্শ বিদ্যা ভবনে।

জানা গেছে এদিন জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভায় মোট ৮১.০১% ভোট হয়, এরমধ্যে জলপাইগুড়িতে ৭৮.৮৩%, নবগঠিত ময়নাগুড়িতে ৮৫.২২% এবং মালবাজারে ৮০.৭২% ভোট পড়েছে।

জলপাইগুড়ি পুরসভা ভোটে এবার নজিরবিহীন সন্ত্রাস লক্ষ করা গেছে। সকাল থেকেই একাধিক বুথে ভোট লুঠ, বুথ জ্যাম, মারপিট, বহিরাগতদের তান্ডব দেখা যায়। অভিযোগের তীর বিরোধীদের দিকে। যদিও রাজ্যের শাসক দল এগুলোকে বিরোধীদের চক্রান্ত বলে জানিয়েছে।

ভোটের ছবি -১

জলপাইগুড়ি পুরসভার বারো নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা। ভোট গ্রহন কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দিল পুলিশ বলে অভিযোগ। বার করে দেওয়া হয় বিজেপি প্রার্থীকেও।

জলপাইগুড়ি পুরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী নারায়ন চন্দ্র সরকারকে বুথ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের এক ডিএসপি সহ পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে।

সকালে ভোট গ্রহণ শান্তি পূর্ন ভাবে শুরু হলেও ,কিছুক্ষণ পরেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয় জলপাইগুড়ি হাই স্কুল বুথে। কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় বাইরের লোকজন বুথের ভেতরে রয়েছে, কিন্তু পুলিসের এক ডি এস পি, কংগ্রেস প্রার্থীকেই বুথ থেকে বার করে দিচ্ছেন।

ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী জয়া সরকারকেও বার করে দেওয়া হয় বলে জানান জয়া দেবী।

অপরদিকে এই প্রসঙ্গে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করলেন।

অথচ ঐ একই স্থানে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তৃনমুল নেতা ধরম পাশোয়ান বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এলাকায় উত্তেজনা। যদিও ধরম বাবু জানিয়েছেন তিনি বুথের বাইরেই ছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্রার্থীরা ভেতরে প্রচার করছিলেন বলে অভিযোগ এসেছে।

ভোটের ছবি -২

সকাল সোয়া এগারোটা নাগাদ নিজের ওয়ার্ডের বুথে এসে ভোট দিলেন জলপাইগুড়ির বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা। জলপাইগুড়ি পুরসভা‌র ৮ নম্বর ওয়ার্ডে‌র বাসিন্দা তিনি।

জলপাইগুড়ি ক্লাব রোডে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের বুথে এসে ভোট দিয়েছেন বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা। তাঁর সঙ্গে দেখা যায় এই ওয়ার্ডে‌র প্রার্থী সৈকত চ‍্যাটার্জি‌কে। বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা বলেন, জলপাইগুড়িতে খুবই শান্তিপূর্ণ‌ভাবে উৎসবের মেজাজে ভোট হচ্ছে। সবাই নিজের পছন্দের প্রার্থী কে ভোট দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডে‌র সবক’টি ওয়ার্ডে‌ই এবার জয়ী হবে তৃণমূল প্রার্থী‌রা।

ভোটের ছবি -৩

বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করার, ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই প্রশ্ন সাংবাদিকরা ৮ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জী কে করলে তিনি বলেন, ছিঃ ছিঃ ছিঃ এসব অভিযোগ শোনাও পাপ। আমরা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহনের পক্ষে। আর তাছাড়া আমরা জিতবো, আমরা কেন গন্ডগোল করবো। গন্ডগোল করবে বিরোধীরা।

ভোটের ছবি -৪

গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে পুলিশ প্রশাসনকে ঠুঠো জগন্নাথ বানিয়ে পুরসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে অবাধে ছাপ্পা ভোট আর বুথ দখলের ছবি। বিরোধীদের অভিযোগের তীর রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে।

এবার জলপাইগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরা গান্ধী কলোনির রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টারের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তীব্র উত্তেজনা। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ কংগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থীদের। এদিন তাদের বুথ থেকে বলপূর্বক বের করে দিয়ে বহিরাগতরা ছাপ্পা ভোট দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ।

জলপাইগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ব‍্যাপক ছাপ্পা ভোট করতে গিয়ে মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকি এই ওয়ার্ডে‌র কংগ্রেস প্রার্থী জয়ন্তী পালের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বুথের ভেতরে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে জলপাইগুড়ি‌‌র ১ নম্বর ওয়ার্ডে‌র বেশ কয়েকটি বুথে। অভিযোগ, পূলিশের সামনেই ছাপ্পা ভোট চলছে জলপাইগুড়িতে। পুরসভা নির্বাচনে এমন চিত্র জলপাইগুড়িতে এর আগে কখনও দেখা যায়নি বলে দাবি শহরবাসীর। ঘটনার প্রতিবাদে মাঝ রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান ১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী জয়ন্তী পাল। ভোট দিতে না পেরে অনেকেই তাঁর পাশে রাস্তায় বসে‌ন। কংগ্রেস প্রার্থী‌র অভিযোগ, মহিলা ভোটারদের পাশাপাশি তাঁর গায়েও হাত দিয়েছে শাসকদলের লোকেরা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা‌ও।

ভোটের ছবি -৫

ভোটের নামে প্রহসন চলছে বলে অভিযোগ করলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী সুমিত্রা মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, সকাল থেকেই অবাধে ছাপ্পা ভোট চলছে। পুলিশ সব দেখেও চুপচাপ বসে রয়েছে। এটা কি ভোট হচ্ছে? দরকার নেই এমন ভোটের?

অন্যদিকে বিরোধীদের ছাপ্পা ভোট, বুথ দখলের অভিযোগ এর প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক ডাঃ প্রদীপ কুমার বর্মা জানান, জলপাইগুড়িতে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। কোথাও ছাপ্পা ভোটের চিহ্ন পাবে না। মানুষ স্বত্ফুর্ট ভাবে তৃণমূল কে ভোট দিচ্ছে।

ভোটের ছবি -৬

সকলের হাতে লাঠি, মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে জলপাইগুড়ি শহরে এক দল যুবক। প্রত্যেক বুথে ঢুকে ভোটারদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই সুযোগে দরজা বন্ধ করে চলছে অবাধে ছাপ্পা ভোট। ভোটের এমন দৃশ্য জলপাইগুড়িবাসী পূর্বে কখনো দেখেনি।

জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেসিক ট্রেনিং স্কুলে লাঠি হাতে রীতিমতো ছাপ্পা ভোট চলছে বলে অভিযোগ৷ সঙ্গে সাংবাদিকদের পাথর ছোড়ার অভিযোগও উঠল লাঠি বাহিনীর বিরুদ্ধে। বেসিক ট্রেনিং স্কুলের ২৪/২ নম্বর বুথের ইভিএম ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। ভয় ও হুমকি দিতে ভোট কর্মীরাও বাইরে বের হয়ে আসেন। এরপর চলে দেদারে ছাপ্পা ভোট। প্রতিটি ওয়ার্ডে একি দৃশ্য। বিরোধীদের অভিযোগ, লাঠি বাহিনী তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। ছাপ্পা ভোট হতেই বিরোধীরা বুথ থেকে বের হয়ে যান। ইভিএম মেশিন নতুন নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্নচিন্হ।

এই বুথের বিজেপি এজেন্ট খুশবু বিশ্বাস বলেন, তিনি এমন দৃশ্য আগে কোনদিনও দেখেন নি। তাদের এই বুথ শান্তিপূর্ণ চিরকাল। তিনি বলেন, লাঠি হাতে দুইজন বুথে ঢুকে ভোট কর্মীদের বসে যেতে বলে ওদের সাথে আসা অন্য যুবকদের ছাপ্পা ভোট দিতে বলে। পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয় নি।

ভোট কর্মী বাদল ভৌমিক বলেন, আট দশজন যুবক মুখে কাপড় বেঁধে লাঠি নিয়ে বুথে সব কিছু ভেঙে দেয়।

শহর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি তথা ২৪ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী অম্লান মুন্সী বলেন, তিনটে পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছিল। কিন্তু তিনটের পর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জুনিয়র বেসিক ট্রেনিং স্কুলের ঢুকে এখানকার চারটি বুথের দখল নেয়, পোলিং এজেন্টদের অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে, মাটিতে ফেলে মারে। তারপর তারা ছাপ্পা ভোট দেয় এবং একটা বুথে পোলিং এজেন্ট ছাপ্পা দিতে বাধা দেওয়ায় তারা আরো লোক নিয়ে এসে সেই মেশিনটিকেই ভেঙে দেয়। গণতন্ত্র এর নগ্ন নৃত্য আজ এই বিদ্যালয়ের মাঠে জলপাইগুড়ির মানুষ তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ প্রত্যক্ষ করলো। তিনি বলেন, তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে জলপাইগুড়ির সমস্ত নির্বাচন বাতিল করে পূর্ন নির্বাচন করার।

ভোটের ছবি -৭

১২ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইগুড়ি হাইস্কুলে একটি বুথে ভোট চলাকালীন দুটি নতুন ইভিএম নিয়ে আসেন ৯নং সেক্টারের কর্মীরা বলে খবর। ইভিএম মেশিন একটি ফাকা ঘরের ভেতরে রাখতেই সংবাদ মাধ্যকে দেখে ফের ইভিএম দুটি নিয়ে চলে গেলেন সেক্টার ৯ এর কর্মীরা। কর্মীদের প্রশ্ন করায় সেক্টার অফিসার বিমল দত্ত বলেন এইখানে আমাদের সেক্টার অফিস রয়েছে। সেকারনেই এখানে ইভিএম রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যদি এখানে সেক্টার অফিস থেকে থাকে তাহলে সংবাদ মাধ্যকে দেখে ইভিএম গুলি না রেখে ফের নিয়ে যাওয়া হল কেন!! পাশাপাশি ইভিএম মেশিন নিয়ে আসা ও যাওয়ার সময় কোন পুলিশ কর্মী ছিল না বলে অভিযোগ।

ভোটের ছবি -৮

এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে নিয়ে এসে বুথের ভেতর ঢুকে নিজেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে ভোট করানোর অভিযোগ এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দ মডেল হাই স্কুল ভোটকেন্দ্রের ঘটনা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। ঘটনার খবর করতে গেলে সংবাদ মাধ্যমকেও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে সাংসদ ডক্টর জয়ন্ত কুমার রায় শাসক দলের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল কংগ্রেসের।

ভোটের ছবি -৯

জলপাইগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্মাসি কলেজের ভোট গ্রহণ কেন্দ্র থেকে ভোটারদের বের করে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ছাপ্পায় বাধা দিতে গেলে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় বিজেপির এজেন্ট সুদীপ রায়কে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চান নি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের।

ভোটের ছবি -১০

পৌরসভা ভোট গ্রহণের দিনেই একটি পোস্টার কে ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি শহরে।

রোববার যখন একদিকে চলছে পৌরসভার ভোট গ্রহণ, ঠিক সেই সময় শহরের বেশকিছু জায়গায়, নাগরিক মঞ্চের নামে ছাপানো একটি পোস্টার কে ঘিরে নাগিরিকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাপা গুঞ্জন,
আনিস খানের নাম লেখা না থাকলেও, দেয়ালে লাগানো পোস্টার টি যে ঐ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়, সুবীর পালিত নামের এক নাগরিকের বক্তব্যের মধ্যে।

ভোটের ছবি -১১

জলপাইগুড়ির বারো নম্বর ওয়ার্ডেই যত গন্ডগোল , সকালে পুলিশের বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থীকে বুথ থেকে বার করে দেবার অভিযোগ ওঠার পর,
বেলা গোড়াতেই এক ভুয়ো ভোটারকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ ওই ব্যক্তি সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্ধা হয়ে বারো নম্বর ওয়ার্ডে এসে ভোট দেবার চেষ্টা করছিলেন, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ও উঠছে বার বার এই বারো নম্বর ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ কে ঘিরে।

ভোটের ছবি -১২

পুর ভোটে নজিরবিহীন সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানিয়ে জলপাইগুড়ি কোতয়ালী থানায় ধর্না দিলেন বিজেপি সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়।

ছাপ্পা ভোট, বুথ জ্যাম, ভোট লুঠ, ইভিএম মেশিন ভাঙা, লাঠি বাহিনীর তান্ডবের প্রতিবাদে জলপাইগুড়ি পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে পুনরায় নির্বাচনের দাবীতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার ধর্নায় বসলেন বিজেপি সাংসদ ডাক্তার জয়ন্ত কুমার রায়, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী সহ অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা।

বিজেপি ডাক্তার জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, আজ জলপাইগুড়িতে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের সূচনা হল। জলপাইগুড়ির মানুষ যেটা কোনদিন ভাবতে পারে নি যে তারা নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারবে না। ছাপ্পা ভোট, বুথ জ্যাম, মারপিট। আজ টিএমসি যা করে দেখালো তার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হল যে টিএমসি গণতন্ত্র এ বিশ্বাস করে না। মানুষের ভোটাধিকার কে তারা পাত্তাই দেয় না।

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামি বলেন, তাঁবেদার পুলিস তৃণমূলের নিলজ্বভাবে দাঁড়িয়ে থেকে তৃণমূলের ভোট করালো। বিজেপি প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট কে বার করে দিয়ে বহিরাগত দের নিয়ে এসে ভোট করাচ্ছে। আজ গণতন্ত্র কে ধর্ষণ করা হল। বাইরে থেকে যেভাবে লোক এনে ভোট লুঠ করা হল এটা আমরা ছোটবেলায় বিহারে শুনতাম। আজ দিদিমনির উন্নত সরকারে দেখলাম।

ভোটের ছবি -১৩

জলপাইগুড়ির যে দুটি ওয়ার্ডে ভোট নিয়ে অশান্তি হয়েছে তারা কারা, পুলিশ সুপারকে খুঁজে বার করতে বলেছি, ভোট গ্রহণ শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানালেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ।

জলপাইগুড়ি শহরের ইতিহাসে এই প্রথম বার ভোট দাতাদের বুথ থেকে পালিয়ে যাবার মত ঘটনা ঘটলো,
এর পাশাপাশি কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরকেও আক্রমণ করা হলো। ভোট গ্রহণ পর্ব মিটতেই জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল জেলা সভানেত্রী।

বুথ দখল, ভোট লুঠ, শহর জুড়ে বহিরাগতদের তাণ্ডপের মতো ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী সমস্ত বিষয়টি বিরোধীদের চক্রান্ত বলে জানান, জলপাইগুড়ি পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম থেকেই তৃণমূল প্রার্থী নিয়ে দলের ভেতরে একটি অসন্তোষ ছিলো, ভোট গ্রহণের দিনে সেই ঘরোয়া অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীরা কেউ চক্রান্ত করেও এমনটা ঘটাতে পারে। তবে তিনি ইতিমধ্যে জেলার পুলিশ সুপারকে পুরো বিষয়টি তদন্ড করে দেখার কথা বলেছেন বলে জানান। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেছেন যে ভোটে বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, বুথে বসার মতো ওদের লোক ছিল না।

জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভা ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, মানুষ তৃণমূলের উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *