জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, ২৫ মে ২০২২ : ককোয়া নদীর দুই তীরে একসাথে জ্বলল দুই বন্ধুর দেহ। নদীর এপারে বছর ২৩ এর যাদব রায় অপর পারে বছর ২২ শের গৌতম রায়। মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী থাকল ধূপগুড়ির পূর্ব মল্লিকপাড়ার বাসিন্দারা। সামান্য আয়ের জন্য তারা ধূপগুড়ির মাগুরমারী-২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কাশ্মীরে কাজে গিয়েছিল।

গত বৃহস্পতিবার জম্মু কাশ্মীরের রাম্বানে ফোর লেন রাস্তার কাজ করার সময় টানেলে ধ্বস নেমে চাপা পড়েন দশ জন শ্রমিক। এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের গদেয়ারকুঠী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তিনজন ও মাগুরমারি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুইজন শ্রমিক ছিলেন। এদের মধ্যে শুক্রবার রাতে একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর একে একে প্রত্যেককেই মৃত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গত রবিবার এই পাঁচজনের দেহ বিমানে এরাজ্যে নিয়ে আসার কথা থাকলেও আবহাওয়া খারাপ থাকায় এম্বুলেন্সে করে দেহ নিয়ে রওনা হয় মৃতের আত্মীয় পরিজনরা। শেষমেষ মঙ্গলবার সকালে মাগুরমারি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুই যুবক গৌতম রায় ও যাদব রায়ের দেহ গ্রামে এসে পৌঁছয়।

কফিন বন্দী মৃতদেহ গ্রামে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারসহ গ্রামের লোকজন। পরবর্তীতে কোকোয়া নদীর দুই তীরে একদিকে যাদব এবং অপরদিকে গৌতম রায়ের দেহ দাহ করা হয় । যে দুই বন্ধু একসাথে কাজে গিয়েছিল কিন্তু ফিরল কফিনবন্দি হয়ে, তা দেখে চোখের জল ফেললেন অনেকেই।
তারপর বিকেলে পরিমল রায়, দীপক রায়, সুধীর রায়ের দেহ বাড়িতে পৌছায়। বিগত কয়েকদিন থেকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। দেহ গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাড়ির লোকেরা। এলাকায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে আসে।

পাশাপাশি জম্মুতে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন জলপাইগুড়ির সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়। মঙ্গলবার ধুপগুড়ির ঐ গ্রামে যান সাংসদ। জম্বু কাশ্মীরে টানেলের কাজে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করেন তিনি।