“বাংলার চানক্য” মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ কি গ‍্যারেজ হওয়ার পথে ?

অরুণ কুমার : অবশেষে “বাংলার চানক্য” মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ কি গ‍্যারেজ হতে চলেছে ? এই প্রশ্ন খুব জোরালোভাবে দেখা দিয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতোই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান স্পিকার। তবে এরজন্য আবার দুপক্ষের শুনানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বিধানসভার স্পিকার। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে মামলার শুনানি করেছিলেন স্পিকার। তার পরে অবশ্য মুকুল রায়কে বিধায়ক পদ খারিজ করেন নি। তার ভিত্তিতে গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট স্পিকারকে সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল।

এই মামলায় আগামী ৬ মে ফের দুপক্ষ তাদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার। ৯ মে নিজের রায় পুনর্বিবেচনা করে মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির আনা বিজেপির দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই শুনানিতে হাজির ছিলেন, দুপক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের আবেদন জানিয়েছিল বিজেপি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষকে তাঁর রায় জানানোর জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মুকুল রয়েছেন বিজেপিতেই। অধ্যক্ষের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। এরপর অধ্যক্ষকে রায় পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয় আদালত। আদালত জানায় আইনি জটিলতার বাইরে গিয়ে মুকুল রায়ের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের যে ফুটেজ দলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে রয়েছে তা বৈধ বলে বিবেচনা করতে হবে।

এদিনের শুনানিতে মুকুল রায় বা শুভেন্দু অধিকারী কেউ বিধানসভায় হাজির ছিলেন না। শুভেন্দুর আইনজীবী ফুটেজ দেখিয়ে ফের দাবি করেন, মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। পালটা ৬৫ বি ধারার দোহাই দিয়ে ওই প্রমাণ গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেন মুকুলের আইনজীবীরা।

এর আগে গত সপ্তাহে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, ‘কলকাতা হাইকোর্ট যে রিমাইন্ডার আমাকে পাঠিয়েছে আমি আইনতভাবে যতটা গ্রহণ করা সম্ভব তা করব। আবার দু’পক্ষকে ডেকে হিয়ারিং করে সিদ্ধান্ত নেব।’ উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল। পরে তিনি আবার তৃণমূলে যোগ দেন। গত ১১ জুন সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বিজেপি ছেড়ে পুনরায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সাংবাদিক বৈঠককে প্রমাণ হিসেবে ধরে স্পিকারকে সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ১১ এপ্রিলের সেই নির্দেশে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে এরজন্য চার সপ্তাহের সময় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। মনে করা হচ্ছে দ্রুতই এনিয়ে হিয়ারিং শুরু করে দেবেন স্পিকার।

সূত্রের খবর, উনার স্ত্রী বিয়োগের পর থেকে হতাশায় ভুগছিলেন। স্নায়বিক দুর্বলতা বাড়ছে –স্মৃতিশক্তিও কমছে, পাশাপাশি অসংলগ্ন কথাবার্তাও বাড়ছে–এ সবই খুব দুঃখজনক ; কিন্তু রাজনৈতিক নৈতিকতাও এ ভাবে নষ্ট হতে থাকবে –এমনটা সত্যিই ভাবা যায় নি ।

কিছু দিন আগে তৃণমূল ভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। বিজেপিতেই আছেন উনি। ফের একবার এমনই দাবি করলেন মুকুল রায়ের আইনজীবী। সম্প্রতি কৃষ্ণনগরের বিধায়কের বিরুদ্ধে দায়ের দলত্যাগ বিরোধী মামলায় বিধানসভার অধ্যক্ষের নির্দেশ খারিজ করে আদালত।

উল্লেখ্য, মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও তাঁর বিধায়ক পদ এখনও খারিজ হয়নি। এরপর দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। তার ভিত্তিতে গত ১১ ই ফেব্রুয়ারি দেশের শীর্ষ আদালত এবিষয়ে স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেয়। তখনও দুই পক্ষের বক্তব্য শুনেই বিধানসভার স্পিকার মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ বহাল রেখেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, যেহেতু তিনি খাতায়- কলমে এখনও বিজেপিতে রয়েছেন তাই তাঁর বিধায়ক পদ বৈধ। তবে নতুন করে কলকাতা হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়ায় অস্বস্তিতে মুকুল রায়।

এসব নানান ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে নিজের রাজনৈতিক ওজনটাই কমিয়ে ফেললেন। অর্থাৎ,মুকুল রায় গ‍্যারেজ। রাজীব গ‍্যারেজ। সব‍্যসাচী গ‍্যারেজ। ঋতব্রত গ‍্যারেজ। সোমেনপত্নী গ‍্যারেজ। চাষার ব‍্যাটা গ‍্যারেজ। শেখার আছে অনেক কিছু বৈকি।
সো কলড বা তথাকথিত “চাণক্য” কার্যত ফিনিশ। না ঘরকা না ঘাটকা। সংগঠন কে হাতের তালুর মতন চেনা এক প্রখর সেয়ানা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সংসদীয় রাজনীতির পাল্লায় পরে নিজেকে শুধু হাস্যকর করে তুললেন তাই নয় হয়ে গেলেন অপাংক্তেয়ও। শাসক তৃণমূল এখন এই চাণক্য কে কোনভাবেই ঘাটাতে চায় না, অপরদিকে বিজেপিও নিশ্চিন্তে থাকতে দিতে চায় না। শাসক বিরোধী না বিরোধী শাসক- এই দড়ি টানাটানিতে বাংলার রাজনীতির চাণক্য অবস্থান সত্যি খুব আশাব্যঞ্জক নয় বলেই মনে পড়ছেনা বাংলার রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *