নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২০ এপ্রিল ২০২২ : পুলিশ শুধু অপরাধ দমন, অপরাধীদের ধরা কিংবা আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজই করে না, তার পাশাপাশি পুলিশ বিভিন্ন সামাজিক, মানবিক কাজও করে থাকে। করোনাকালে পুলিশকে দেখা গেছে করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার, ওষুধ পৌঁছে দিতে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পুলিশকে দেখা গেল এক কৃতী ছাত্রীর পাশে দাঁড়াতে। তাঁর স্বপ্ন পূরণের সাথী হতে।

১৯৮৩ সালে মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন জলপাইগুড়ি শহরের আদর পাড়ার বাসিন্দা নারুগোপাল দাশগুপ্ত। সেই দুর্ঘটনায় তাঁর ডান হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছিল। এরপর থেকে এক হাতেই রুজি রোজগার সামলাতে হচ্ছে তাঁকে। প্রতিবন্ধী বাবার জীবন যুদ্ধে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মেয়ে নবাম্বিকা। জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে পাস করা নবাম্বিকা স্টেশন বাজারে বাবার সঙ্গে লটারির টিকিট বিক্রি করেন। গত দেড় বছরে করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।

নবাম্বিকার স্বপ্ন ছিল ডব্লিউ বিসিএস পড়ে প্রশাসনিক কাজে যোগ দেবে। আর্থিক প্রতিবন্ধকতায় সেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না তাঁর। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে এই কৃতী ছাত্রীর পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে এসেছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ প্রশাসন। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মীরাই প্রথমে এই কৃতী ছাত্রীকে সহযোগিতা করতে নিজেরা অর্থ সংগ্রহ শুরু করেন। এই সংবাদ পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্তও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
মঙ্গলবার থানায় সংবর্ধনা জানানো হয় নবাম্বিকাকে। আর্থিক সাহায্যও তুলে দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ সেন, ডিএসপি হেড কোয়াটার সমীর পাল, আইসি অর্ঘ্য সরকার। জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “নবাম্বিকার জীবনের স্বপ্ন আশা করি সফল হবে। একজন দক্ষ আধিকারিক হিসেবে আগামী দিনে সে কাজ করতে পারবে বলে আশা রাখছি।” পুলিশের এই ধরনের মানবিক উদ্যোগে খুশি নবাম্বিকা ও তাঁর বাড়ির লোকেরা।