অরুণ কুমার, জলপাইগুড়ি, ১০ জুন ২০২২ : শাসকদলের আইনজীবিদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে তৈরি হয়েছিল আইনজীবী ঐক্য মঞ্চ। এবারের নির্বাচনে তারা তৃণমূল আইনজীবী সংগঠনকে পুরোপুরি হটিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল নিল জলপাইগুড়ি বার এসোসিয়েশনের।
জলপাইগুড়ি বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে তৃনমুলকে ধরাশায়ী করে ক্ষমতায় এলো আইনজীবী ঐক্য মঞ্চ। গোষ্ঠী কোন্দলের জন্য পরাজয় স্বীকার করে নিলেন তৃনমুল নেতৃবৃন্দ।

বুধবার দিনভর জলপাইগুড়ি বার এসোসিয়েশনে ভোট গ্রহন হয়েছিল। ভোট দিয়েছিলেন বার এসোসিয়েশনের ছয় শতাধিক আইনজীবী সদস্য। বৃহস্পতিবার টানটান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে গননা চলে। এদিন ৮ টা নাগাদ গননা শেষ হয়। ফল প্রকাশের পর দেখা যায় শাসক দলের প্রার্থীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে ঐক্য মঞ্চের প্রার্থীরা।
এই বছর বারের ২৩ টি আসনে ভোট হয়। যার মধ্যে ১৫ টি আসন দখল করে ঐক্য মঞ্চ এবং ৮ টি আসনে জয়লাভ করে তৃনমূল।
ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় অফিস পরিচালন কমিটির ৮ টি আসনের মধ্যে ৭ টি ঐক্য মঞ্চ, ১ টি তৃনমুল এবং ১৫ টি এক্সুকেটিভ সদস্যদের মধ্যে ৮ টি ঐক্য মঞ্চ এবং ৭ টি আসন দখল করে তৃনমূল। এদিন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী বিপুল রায় এবং প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী সোমনাথ পাল।

নব নির্বাচিত সম্পাদক বিপুল রায় বলেন, আমি কোনও রাজনৈতিক দল করিনা। আমাকে সকলে ভোট দিয়েছে। আমার কাছে আইনজীবীদের যে কোনও সমস্যা প্রাধান্য পাবে। বার এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বলেন, শাসক দলকে পরাস্ত করতে আইনজীবীদের ঐক্য মঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। আমাদেরকে বেশিরভাগ সদস্য ভোট দিয়েছে। আমরাই ক্ষমতায় এলাম।

অপরদিকে ঐক্য মঞ্চকে রামধনু জোট বলে কটাক্ষ করেছেন তৃনমূল আইনজীবী সংঘের সৈকত চ্যাটার্জী। তিনি বলেন, এখানে তৃনমূলকে হারাতে নীতিহীন জোট করেছিল বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তৃনমূল সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে।

ফলাফলে হতাশ শুধু নন ক্ষুব্ধও তৃণমূলের আইনজীবী সংঘের নেত্রী শান্তা চ্যাটার্জী।ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনিও পরাজিত হন।আর তাকে চক্রান্ত করেই হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ শান্তা দেবীর। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কে জানাবেন বলে শান্তাদেবী জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার দুদিনের উত্তরবঙ্গ সফর শেষ করে কলকাতায় ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক তথা আইনজীবী দের ভোটে তৃনমূলের এই শোচনীয় পরাজয়ে দলের অন্দরেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আভ্যন্তরীণ কোন্দল আরো তীব্রতর হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ বিষয়ে আগামীদিনে দলের মধ্যে আলোচনা হবে এবং বিষয়টি কলকাতা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে এই বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে তৃণমূল পন্থীদের পরাজয়ের খবর। দেখার বিষয় এই পরাজয়ের পর রাজ্য তথা জেলা নেতৃত্ব কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে।