সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২৭ ডিসেম্বর’২৩ : লোকসভা ভোটের এখনও কমবেশি চার মাস দেরি। বিশ্বকর্মা পুজো কিংবা পৌষ সংক্রান্তিও আসতেও সময় আছে। কিন্তু এর মধ্যেই শহরের দুই একটি দোকানে ঘুড়ি দেখে থমকে যাচ্ছেন অনেকেই। কেউ কেউ মাথা চুলকে বিষয়টা হজম করার চেষ্টা করছেন।

বাজারে ক্রিসমাসের সামগ্রী কিনতে এসে মানুষ দেখছেন ঘুড়ি ঝুলছে। সে যেই সেই ঘুড়ি নয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ছবি ছাপা ঘুড়ি। কিছু মানুষ অবাক হলেও অনেকেই কিনছেন সেই ঘুড়ি। কারণ এই শীতের দুপুরে শহরের বাইরে ফাঁকা মাঠে অনেক শিশুর সাথে ঘুড়ি ওড়ান বয়স্করাও। দোকানিরা বলছেন আমাদের কাছে লটে আসে। কি আসছে কে দেখে। এসেছে তাই ঝুলিয়ে রেখেছি। বিক্রিও হচ্ছে খাসা। আমার লাভ দিয়ে কথা।

ভোট থাকুক না থাকুক রাজনৈতিক তরজা তো সারা বছরই চলতে থাকে শহরে। কিন্তু এবার যে আকাশযুদ্ধের প্রস্তুতি! অবশ্য এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেই বলছেন দোকানি থেকে ক্রেতা সকলেই। কিন্তু মোদীর সাথে যোগীর মুখ থাকায় বিষয়টা নিয়ে হাসিঠাট্টা কিংবা আলোচনা তো শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু আকাশে ভোকাট্টার লড়াইয়ে মুখোমুখি খুদেদের হাতে থাকতে চলেছে মোদি যোগী ঘুড়ির লাটাই। পেটকাটা, ডিজাইনার, সতরঞ্চিদের সাথে নানা রকম কার্টুনের মাঝে আকাশে জায়গা করে নিচ্ছে মোদি যোগী ঘুড়ি। কেউ মাথা উচুঁ করে উড়ে চলবে। কেউ আবার ভোকাট্টা হয়ে ভেসে গিয়ে পড়বে কোনও মাঠে। কিন্তু চায়ে পে চর্চা হবে ঘুড়ি নিয়ে।

এমনিতে বিশ্বকর্মা পুজো ছাড়াও পৌষ মাস ধরে জলপাইগুড়ির আকাশে চলে ঘুড়ি ওড়ানোর লড়াই। অবশ্য তার বেশিরভাগটাই দেখা যায় শহর সংলগ্ন গ্রামাঞ্চলে। কিন্তু ঘরে ঘরে মুঠোফোন ঢুকে পড়ায় ঘুড়ি ওড়ানোর চল এখন অনেকটাই কম। কিন্তু মেয়ের জন্মদিনের বেলুন, টুপি কিনতে এসে এই মোদী যোগী ঘুড়ি দেখে তা কিনে নিলেন সঞ্জয় মন্ডল। তার যুক্তি, মাঝে মাঝেই বাড়ির পাশের ফাঁকা জমিতে ঘুড়ি ওরাই বাচ্চাদের সাথে। এবার না হয় প্রধানমন্ত্রীর সুতো থাকবে আমার হাতে। আর যদি নাও ওড়াতে পারি তবে স্মৃতি হিসেবেই এটা ঘরে থাকবে। এরকম ঘড়ি আগে তো দেখেনি। তাই কিনে নিলাম।

নরেন্দ্র মোদির মুখের ছবি দেওয়া ঘুড়ি দেদার বিকোচ্ছে জলপাইগুড়ির বাজারে। মোদীর ছবির পাশে যোগীর মুখ এটা আলাদা কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে কিনা সেটা কেউ না বলতে পারলেও ঘুড়ি পাগলরা নিজেদের কালেকশন বাড়াতে কিনে নিচ্ছেন ঝটপট। প্লাস্টিকের এই ঘুড়ির দাম মাত্র পাঁচ টাকা। তাই পকেটেও টান পড়ছে না ক্রেতাদের। বিক্রিও তাই ভালোই। বিক্রেতারা বলছেন, যা ঘুড়ি ছিল সবই প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আর কয়েকটি মাত্র পড়ে আছে। যারা ঘুড়ি কিনতে আসছেন তারা সঙ্গে করে অবশ্য কার্টুনের ছবি দেওয়া ঘুড়িও নিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রিও ভালোই হচ্ছে।