জলপাইগুড়ি, ১৯ মে: উত্তরবঙ্গজুড়ে চলছে সাজ সাজ রব। আগামীকাল সোমবার বিকেলে শিলিগুড়িতে পা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দিনের সফরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তিনি। প্রশাসনিক মহল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলেও বাড়ছে উত্তেজনা। বিশেষ করে এই সফরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে শিল্প সম্ভাবনার বার্তা ও সরকারি পরিষেবা বিতরণ—যা আগামী দিনে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নপথকে প্রভাবিত করতে পারে।

বিশেষ বিমানে সোমবার বিকেলেই বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে সরাসরি শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে গিয়ে অংশ নেবেন একটি উচ্চপর্যায়ের বিজনেস মিট-এ। এই বৈঠকে থাকবেন রাজ্যের শিল্পপতিরা। রাজ্যে ৪৩টি নতুন মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রি গড়ার পরিকল্পনার ঘোষণার পর এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০ মে, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী যাবেন জলপাইগুড়ির ডাবগ্রামের ফুলবাড়ি ভিডিওকন মাঠে। সেখানেই হবে প্রশাসনিক সভা। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়ি জেলার উপভোক্তাদের হাতে সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন উপকরণ তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। তার আগে সভাস্থল ঘুরে গিয়েছেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়-সহ প্রশাসনের একাধিক প্রতিনিধি।

২১ মে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যা গেস্ট হাউসে করবেন এক উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক। উপস্থিত থাকবেন উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। সেখানে পর্যালোচনা করা হবে সরকারি প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
মুখ্যমন্ত্রীর সফর নির্বিঘ্ন করতে ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। শিলিগুড়ি শহর ও আশপাশে চলছে টহলদারি, মোতায়েন হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। দীনবন্ধু মঞ্চ ও ভিডিওকন মাঠে চলছে মঞ্চ নির্মাণ ও কারিগরি প্রস্তুতির কাজ। সবকিছু খতিয়ে দেখেছেন দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক প্রীতি গোয়েল।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরনামা একনজরে:
১৯ মে (সোমবার): বিকেলে শিলিগুড়ি পৌঁছনো, দীনবন্ধু মঞ্চে বিজনেস মিট, রাত্রীযাপন উত্তরকন্যায়
২০ মে (মঙ্গলবার): ভিডিওকন মাঠে প্রশাসনিক সভা ও উপকরণ বিতরণ
২১ মে (বুধবার): উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক
২২ মে (বৃহস্পতিবার): কলকাতা ফেরত
মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে শুধুই প্রোটোকলের সফর বলা যাবে না। শিল্প সম্ভাবনা থেকে প্রশাসনিক কৌশল, একাধিক ইঙ্গিতবাহী বার্তা রয়েছে এই কর্মসূচিগুলিতে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সফরের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের জন্য কিছু নতুন প্রকল্প বা বড় ঘোষণা করে যেতে পারেন।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে এখন একটাই আলোচনার বিষয়—মমতার সফর কতটা রূপান্তর আনবে এই অঞ্চলের উন্নয়নে।