সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২২ আগস্ট : নিজের এলাকা থেকে এই প্রথম পলিটেকনিকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা সম্পূর্ণ করলেন আদিবাসী ছাত্রী ববিতা ওঁরাও। খুশি পরিবারের সদস্যসহ ও এলাকার বাসিন্দারা। রবিবার জলপাইগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ববিতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য ভবিষ্যতে ববিতা বিটেক নিয়ে পড়তে চায়। জেলার বিভিন্ন চা বাগান এলাকাগুলোতে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয় শ্রমিক পরিবারগুলোকে। সেরকম একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে জলপাইগুড়ি শহরের অদূরে ডেঙ্গুয়াঝার চা বাগানের ১০ নম্বর লাইন থেকে বহু প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শ্রমিক পরিবারে বেড়ে ওঠা ববিতার এই সাফল্যে হাসি ফুটিয়েছে তার পরিবারসহ এলাকাবাসীদের মধ্যে। ববিতা এই বছর রাজগঞ্জ গভমেন্ট পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছে।
ববিতা জানায়, চা বাগান এলাকাগুলোতে পড়াশোনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। বাধা টপকে অনেকেই পড়াশোনা সম্পন্ন করতে পারে না। পরিস্থিতি এমন হয় যে, বয়স হওয়ার আগেই অনেককেই বিয়ে দেওয়া হয়। যারা পড়াশোনা করতে চায় তাদের জন্য একটু সুযোগ করে দেওয়া উচিত। চা বাগান এলাকাগুলোয় অর্থের সমস্যা সবচেয়ে বড় সমস্যা। সরকারিভাবে যদি আরো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তাহলে এই সমস্যা পেরিয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে বলে জানান ববিতা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, আমাদের সংস্থার ফুটবল কোচিং ক্যাম্পের একজন ছাত্রী ববিতা ওরাও। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও যথেষ্ট পারদর্শী সে। আদিবাসী পরিবারের ছাত্রী ববিতা অনেক লড়াই করে আজ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিপ্লোমা পাস করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই একসময় তার বিয়ের তোড়জোড় করা হয়েছিল। কিন্তু ববিতার পড়াশোনার প্রতি অদম্য চেষ্টা পরিবারের সেই চেষ্টাও ব্যর্থ করে দেয়। তার পরিবারসহ এলাকার সকলেই এখন ভীষণ খুশি। ভবিষ্যতে এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি “আইকন” ববিতা ওঁরাও যার সাফল্য অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদেরও মোটিভেট করবে বলে জানান তিনি।