অবিভক্ত উত্তরবঙ্গ ও দেবী চৌধুরানী

লেখক পঙ্কজ সেন

অবিভক্ত বাংলায় তিস্তা নদীর জলপথ ব্যবহার করে নানা স্থানে যাতায়াত করতেন দেবী চৌধুরানী। প্রচলিত মত অনুযায়ী বৈকন্ঠপুর বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বর্তমান বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের অন্তর্গত রংপুর জেলার চিলমারী থেকে তিস্তা নদী দিয়ে বজরা করে দেবী চৌধুরানী জলপাইগুড়ির দিকে আসতেন। ১৯৯০ সালে শিলিগুড়ির চম্পাসারি এলাকা থেকে এরকম একটি নৌকো পাওয়া যায় যা দৈর্ঘ্যে লম্বা হলেও প্রস্থে সংকীর্ণ ছিল। সাধারণভাবে “ছিপ”নামে পরিচিত এই নৌকো জলপথে অত্যন্ত দ্রুত চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হতো। ২০০৬ সালে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকা থেকেও একই ধরনের আরও একটি নৌকো পাওয়া যায়। উক্ত দু’টি নৌকো আপাতত উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেরিটেজ বিভাগে রাখা আছে। পরীক্ষা করে জানা যায় যে এই নৌকাগুলির বয়স কম করে ২০০ বছরেরও বেশি। ফলে সেই সময় দেবী চৌধুরানী নৌকো করে জলপাইগুড়ি সহ বৈকন্ঠপুর বনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন বলে ধারণা করা হয়। সেই সময় বৈকুন্ঠপুর এলাকাটির মালিকানা নির্দিষ্ট কারোও হাতে ছিল না। তাই এই এলাকাটি নিরাপদ বলে মনে করতেন দেবী চৌধুরানী। ১৯৫৪ সালের আরএস খতিয়ানে জলপাইগুড়ির রায়কত পরিবারের তরফে জলপাইগুড়ি শহরের গোশালার মন্দিরটিকে দেবী চৌধুরানীর মন্দির হিসেবে বিএলএলআরও দপ্তরে নথিভুক্ত করা হয়েছে। পূর্বে রায়কত পরিবার এই মন্দিরে আর্থিক সহায়তা করত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *