নিরাপত্তা বজায় রেখে বৈকুন্ঠপুর গভীর জঙ্গলে আয়োজিত হল বনদুর্গার পূজা

শিলিগুড়ি : পৌষ-পূর্ণিমার পবিত্র রাতে, ঐতিহ্য মেনে রাজগঞ্জের ফাঁড়াবাড়ির নিকটস্থ বৈকুন্ঠপুর গভীর জঙ্গলে অনুষ্ঠিত হল বনদুর্গার পূজা। এবছর এই পূজা তার ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বহু ভক্তদের উপস্থিতিতে আয়োজনটি পূর্ণতা লাভ করে।

ইতিহাস ও ঐতিহ্য : বনদুর্গার পূজা ঐতিহাসিকভাবে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের স্মৃতিবিজড়িত দিল্লিভিটা চাঁদের খাল নামে পরিচিত এই স্থানের উল্লেখ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাসেও পাওয়া যায়। বহু বছর আগে এখানকার স্থানীয়রা ঠুনঠুনিয়া মায়ের পূজা করতেন, যা পরে বনদুর্গার পূজা নামে পরিচিতি লাভ করে।

আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা : বর্তমানে বৈকুণ্ঠপুরের গভীর জঙ্গলের মাঝে স্থায়ী মন্দিরে এই পূজা বিশেষ রীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে পূজার সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কোভিড মহামারীর কারণে কিছু বছর দিনের বেলায় পূজা হলেও, গত বছর থেকে আবার গভীর রাতে পূজা শুরু হয়েছে।

পুজো কমিটির বক্তব্য : বনদুর্গা পূজা কমিটির সম্পাদক রাজু সাহা জানান, “প্রতিবছর পৌষ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে গভীর রাতে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবছরও প্রশাসনের সমস্ত নিয়ম মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই ভক্তদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নিষ্ঠা ও ভক্তিভরে পূজা সম্পন্ন হয়েছে।”

Bandurga Puja was organized in the deep forest of Baikunthapur while maintaining security

ভক্তদের অংশগ্রহণ : শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, এবং আশপাশের এলাকা থেকে ভক্তরা বনদুর্গার মন্দিরে এসে প্রার্থনা করেন। পূজা উপলক্ষে জঙ্গলের এই অংশে এক পবিত্র পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

বনদুর্গার পূজা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গলের ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এক উৎসব। ভক্তদের নিষ্ঠা এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় পূজা আরও সুশৃঙ্খল এবং জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *