টেন্ডার ফর্ম না পাওয়ায় পঞ্চায়েত দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ঠিকাদারদের

রাহুল মন্ডল, মালদা : টেন্ডার ফর্ম না পাওয়ায় পঞ্চায়েত দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ঠিকাদারদের। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া-১ ব্লকের কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তদন্তের আশ্বাস বিডিওর।

জানা গেছে, রতুয়া-১ ব্লকের কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তরে মাধ্যমে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত জানুয়ারি মাসে ১৩ তারিখে কাজের নোটিশ লাগানোর কথা কিন্তু তা করা হয়নি। প্রধান গোপনভাবে টেন্ডার করতে চাইছিলেন এমনটাই অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার বেশকিছু ঠিকাদার পঞ্চায়েত দপ্তরের ফর্ম নিতে হাজির হলেই,সেখানে গিয়ে দেখা যায় প্রধান গরহাজির। তাই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের তালা ঝুলিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভ চলার পর রতুয়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ঠিকাদার শেখ মাজবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন আমরা সূত্র মারফত জানতে পারি কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নের জন্য প্রায় ৪৮ লক্ষ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রধান কাজ চুরি করার জন্য নোটিশ বোর্ডে কোন বিজ্ঞপ্তি জারি করেন নি। আমরা সূত্র মারফত জানতে পারি এখানে একাধিক প্রকল্পের জন্য প্রায়ই ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ পাওয়ার জন্য আমরা বেশকিছু ঠিকাদার টেন্ডার ফর্মের জন্য সময় মতো পঞ্চায়েত দপ্তরের দরখাস্ত করেছিলাম। পঞ্চায়েত সেক্রেটারি উত্তম রবিদাস আমাদের বুধবার ডাকেছিলেন ফর্ম দেওয়ার জন্য। কিন্তু পঞ্চায়েত দপ্তরের এসে দেখি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান টেন্ডার ফর্মে সই করেননি। আমরা সেখান থেকে ফিরে গিয়ে রতুয়া-১ ব্লকে বিডিওকে প্রধানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাই। এমনকি চাঁচল আই এস জি পি কে ও জানানো হয়েছে বিষয়টি। আজ আমরা পুনরায় সকল ঠিকাদার মিলে পঞ্চায়েত দপ্তরের এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখা যায় প্রধান গরহাজির এবং অন্যান্য পঞ্চায়েত কর্মীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।কিছু মুষ্টিমেয় ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগে রয়েছেন প্রধান বেবি রানী মন্ডল। এবং বাকি অন্যান্য ঠিকাদারদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই আজ আমরা বাধ্য হয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছি।

প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাংশ সদস্য। তাদের অভিযোগ কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। আমাদের ৮ জন সদস্যর সমর্থনে প্রধান হন বেবি রানী মন্ডল।তবে প্রধানের সমস্ত কাজকর্ম প্রধানের ছেলে বিপ্লব মন্ডল চালাতেন।বিপ্লব মন্ডল আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের সকল সদস্য ও কিছুসংখ্যক পঞ্চায়েত কর্মীদের অন্ধকারে রেখে গোপন ভাবে টেন্ডার করেছেন। এর আগেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে।বৃহস্পতিবার ছিল কাজের টেন্ডার ফর্ম দেওয়ার শেষ দিন।বুধবার বেশকিছু ঠিকাদার এসেছিলেন পঞ্চায়েত দপ্তরের কাজের টেন্ডার ফর্ম নিতে। কিন্তু তাদের টেন্ডার ফর্ম না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজকেও গরহাজির ছিল প্রধান বেবি রানী মন্ডল ও অন্যান্য পঞ্চায়েত কর্মীরা। প্রধান গোপনভাবে টেন্ডার করে বেশ কিছু মুষ্টিমেয় ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চালাচ্ছেন। আমরা চাইছি এই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে স্বচ্ছভাবে পুনরায় টেন্ডারের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হোক।

প্রধান বেবি রানী মন্ডলকে ধরা হলে তিনি জানান সমস্ত প্রক্রিয়া মেনেই টেন্ডার করা হয়েছে।আজ সারাদিন পঞ্চায়েত দপ্তরের ছিলাম। বিকাল তিনটার পরে দপ্তর থেকে বেরিয়েছি। গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশকিছু সদস্য নিজেদের পেটোয়া ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে বলছে।তাদের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানিয়েছেন ঠিকাদারদের লিখিত অভিযোগ জানাতে।তাদের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল নিয়ে বিডিও কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *