টোটোর রেজিস্ট্রেশন : জলপাইগুড়ি পুরসভা বেআইনি কাজ করছে অভিযোগ বামপন্থী টোটো ইউনিয়নের (ভিডিও সহ)

জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ি পুরসভা বেআইনি কাজ করছে বলে অভিযোগ করলো সিটু সমর্থিত জলপাইগুড়ি ই-রিক্সা চালক ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক শুভাশিস সরকার।

শুক্রবার সিটু সমর্থিত জলপাইগুড়ি ই-রিক্সা চালক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আর জি কর কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবী সহ নিজেদের রুটি রুজির সমস্যার কথা তুলে ধরে রীতিমতো মিছিল করে জলপাইগুড়ি পুরসভার গেটে অবস্থান বিক্ষোভে ফেটে পরেন টোটো চালকরা। উল্লেখ্য, পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে জলপাইগুড়ি পুরসভা শহরে টোটো চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তারা জানিয়েছে শহরে যানজট সমস্যা মেটাতে 5000 টোটো চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।

তার সঙ্গে শহর সংলগ্ন চারটি পঞ্চায়েত ব্যাতিত অন্য এলাকার টোটোকে শহরে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ার পাশাপাশি 500 টাকার বিনিময়ে টোটো চালকদের উপযুক্ত কাগজপত্র দেখিয়ে পুরসভা থেকে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর সংগ্রহের নির্দেশ জারী করেছে, যে কারনে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত টোটো চালকেরা টোকেন সংগ্রহের তাগিদে বিগত কয়েক দিন ধরে ভিড় করছেন জলপাইগুড়ি পুরসভা দপ্তরে। এই সমস্যা দ্রুত নিরসনের দাবিতে শুক্রবার ই-রিক্সা চালক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পুরসভার গেটে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিতভাবে সমস্যা সম্পর্কে অবগত করে ।

এই প্রসঙ্গে সিটু সমর্থিত জলপাইগুড়ি ই-রিক্সা চালক ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক শুভাশিস সরকার জানান, একদিকে আরজিকর নিয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে টোটোচালক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যেমন প্রতিবাদে সামিল হয়েছে, সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ি পুরসভা দ্বারা টিন নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে যে পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে আমরা তার তীব্র বিরোধিতা করে এটাই বলতে চাই, রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর দেওয়ার নামে টোটো চালকদের হয়রানি বন্ধ করা হোক।

শহরে চলাচলকারী সমস্ত টোটো চালকদের রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর দিতে হবে। সামনেই পুজো, তাই গ্রাম শহরের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে সব জায়গার টোটো চালকদের শহরে চলতে দেওয়া হোক। এরপর তিনি অভিযোগ করেন, রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর কে কেন্দ্র করে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কারো কারো বাড়িতে টাকার বিনিময়ে পুরসভার কার্ড পৌঁছে যাচ্ছে। পুরসভার টোকেন 100/200 টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে। আর টোটোর কাগজপত্র তৈরির জন্য বিভিন্ন কম্পিউটার সেন্টার, টোটোর শোরুম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দুর্নীতি করছেন। আমরা এই সব দুর্নীতির তদন্ত দাবী করছি। পাশাপাশি রাজ্য পরিবহন দপ্তর গত সপ্তাহে বৈঠক ডেকেছিল। সেখানে আমাদের ইউনিয়ন সহ অন্যান্য ইউনিয়ন ছিল। এই টোটোর বিষয়টা রাজ্যের পরিবহন দপ্তর দেখবে, RTO দেখবে এবং তারা একটা আপস তৈরি করছে। তিনি আরো বলেন, রাজ্য পরিবহন দপ্তরের সমীক্ষা অনুযায়ী এই মুহূর্তে রাজ্যে 15 লক্ষ টোটো চলে, তার মধ্যে 4 লক্ষ ই-রিকশা, 11 লক্ষ টোটো। এই 11 লক্ষ টোটোকেই রাজ্য পরিবহন দপ্তর রেজিস্ট্রেশন দেবে এবং সেটা অনলাইনের আপসের মাধ্যমে হবে। সেই গন্ধটা পুরসভা পেয়েছে। তাই বিষয়টা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আগে তড়িঘড়ি পুরসভা 5000 টোটো চালকের কাছ থেকে 500 টাকা করে নিয়ে মোট 25 লক্ষ টাকা টোটো চালকদের কাছ থেকে আদায় করছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। তাই তার দাবী এভাবে 500 টাকার বিনিময়ে টোটো চালকদের রেজিস্ট্রেশন ও টিন নম্বর দেওয়ার নামে যে কাজ পুরসভা করছে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি।

এ দিন আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা টোটো বৈঠকে থেকেও এ দিন আন্দোলনের পর দাবি করছেন সকল টোটো চালকদের রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। শহর ও গ্রামের টোটো ভেদাভেদ করা যাবে না। প্রশ্ন উঠছে বৈঠকে থেকে পুরসভার সিদ্ধান্তের পক্ষে থেকে এখন কেন তাঁরা আন্দোলন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *