‘তিস্তা প্রহার’: চিকেন নেক ঘিরে ত্রিমাত্রিক যুদ্ধপ্রস্তুতির নজির ভারতীয় সেনার

শিলিগুড়ি, তিস্তা ফায়ারিং রেঞ্জ: উত্তরবঙ্গের স্পর্শকাতর ভূখণ্ডে, বিশেষ করে কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ চিকেন নেক করিডরকে ঘিরে ভারতীয় সেনা শুরু করল যুগোপযোগী ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরক্ষা অনুশীলন। ৮ থেকে ১০ মে পর্যন্ত তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে অনুষ্ঠিত হল ‘তিস্তা প্রহার’, যা একাধারে ছিল বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রতিকৃতির মতো, আবার অন্যদিকে ছিল সেনার যৌথতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাইলফলক।

এই সমন্বিত ফিল্ড এক্সারসাইজ পরিচালনা করে ত্রিশক্তি কর্পস, যাদের অধীনে রয়েছে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের সংবেদনশীল চিন সীমান্ত। সেখানেই উপস্থিত ছিল পদাতিক, কামান, সাঁজোয়া বাহিনী, প্যারা স্পেশাল ফোর্স, সেনা বিমান শাখা, ইঞ্জিনিয়ার ও সিগন্যাল কর্পসের শক্তিশালী অংশগ্রহণ।

‘তিস্তা প্রহার’-এর মূল লক্ষ্য ছিল: যুদ্ধের জটিল পরিবেশে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো, যৌথ অপারেশনে সেনার শাখাগুলির সমন্বয় সাধন এবং উন্নত ভারতীয় প্রযুক্তির বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগ।

এই অনুশীলনে ব্যবহৃত হয় অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল, ভারতীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত আক্রমণাত্মক ড্রোন, হেলিকপ্টার ও ডিজিটাল কমান্ড সিস্টেম। একাধিক পর্যায়ে নদী, জঙ্গল ও পাহাড়ে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের স্ট্র্যাটেজি অনুশীলন করানো হয়, যা বিশেষ গুরুত্ব রাখে চিকেন নেকের মতো দুর্গম এলাকায় রণকৌশল গঠনের ক্ষেত্রে।

সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই মহড়ার মাধ্যমে আমরা শুধু সামরিক প্রস্তুতিই যাচাই করিনি, সেনার সর্বোচ্চ সমন্বয় ও প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের সক্ষমতা তুলে ধরেছি।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মহড়া শুধু অভ্যন্তরীণ রণকৌশলই নয়, কূটনৈতিক বার্তাও বহন করে। প্রতিবেশী দেশগুলিকে—বিশেষ করে বাংলাদেশ ও চিনকে—এক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে ভারত, যে প্রয়োজনে দ্রুত, সমন্বিত ও কার্যকর প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা।

'Tista Prahar': Indian Army's example of three-dimensional war preparedness around Chicken Neck

এবারের ‘তিস্তা প্রহার’ মহড়া যেমন যুদ্ধক্ষেত্রে সেনার আধুনিকায়নের প্রতিচ্ছবি, তেমনই দেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা ও প্রস্তুতির এক বলিষ্ঠ প্রমাণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *