মানিকচকে বায়োগ্যাস চুল্লি পুনরায় চালু করার দাবি এলাকাবাসীর

রাহুল মন্ডল, মালদা,২৭ এপ্রিল ২০২২ : উদ্বোধনই সায়, অবহেলায় পরে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মানিকচকের একমাত্র বায়োগ্যাস চুল্লি। দ্রুত সংস্কার করে সচল করার দাবি তুলেছে মানিকচকের সাধারণ মানুষরা। কংগ্রেসের সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে তৈরি হওয়ায় তৃণমূলের চাপে সরকারি আমলাদের অবহেলা বলে দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বের। মানুষের পরিষেবার যোগ্য হোক, প্রশাসন নজর দিক বলে দাবি বিজেপি ও কংগ্রেসের।

উল্লেখ্য, মালদা জেলায় একমাত্র ইলেক্ট্রিক গ্যাস চুল্লি রয়েছে ইংরেজবাজারের সাদল্লাপুরে। এই সাদল্লাপুর জেলা তথা বিভিন্ন জায়গা থেকে সনাতন ধর্মের মানুষদের মৃতদেহ দাহ করার জন্য নিয়ে নিয়ে যায়। তবে সাদল্লাপুরে এক দিনে একাধিক মৃতদেহ দাহ করায় প্রচুর অসুবিধার মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। তারই বিকল্প হিসাবে মানিকচক গঙ্গা নদীর পারে ২০২০ সালে তৎকালীন মানিকচকের কংগ্রেস বিধায়ক মোত্তাকিন আলমের ও কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসান খান চৌধুরীর উদ্যোগে তৈরি হয় বায়োগ্যাস চুল্লি।সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বায়োগ্যাস চুল্লি নির্মাণ করা হয়। ঘটা করে উদ্বোধনও হয় চুল্লিটির। তবে উদ্বোধনের পর কয়েক দিন সেখানে মৃতদেহ দাহ করা হয়। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যে হঠাৎ বায়োগ্যাস চুল্লি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ভুগছে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত বায়োগ্যাস চুল্লি।

জেলার গঙ্গা নদীর এই মানিকচক ঘাটে জেলা তথা ভিন্ন জেলার মানুষ এই ঘাটে আসেন পরিজনদের দেহ সৎকারের জন্য। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার সময় প্রচুর অসুবিধার মুখে পড়তে হয় দেহ সৎকারে আসা বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের।সেই অসুবিধা দূর করতেই কংগ্রেস সাংসদ ও বিধায়ক এই বায়োগ্যাস চুল্লি নির্মাণ করলেও পরিষেবা থেকে ব্যহত মানুষ। এই বায়োগ্যাস চুল্লি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নদীর তীরে ঝড় বৃষ্টির মধ্যেই কাঠ দিয়ে মৃতদেহ দাহ করার প্রক্রিয়া চলছে মানিকচকের এই গঙ্গার ঘাটে।

এলাকাবাসীদের দাবী, প্রশাসন উচিত পদক্ষেপ নিয়ে এই বায়োগ্যাস চুল্লি পরিষেবা পুনরায় স্বাভাবিক করুক। মানুষ যেন পরিষেবা পায় সেই ব্যবস্থা করুক। এই বিষয়ে মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক মোত্তাকিন আলম জানান, বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের তহবিলের টাকা থেকে এই বায়োগ্যাস চুল্লি তৈরি করা হয়েছে সেই কারণে শাসক দল কোন হেলদোল দেখাচ্ছে না। ব্লক প্রশাসনের আমলাদের বারংবার বলার পরও কোনো সাড়া দেননি। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন দপ্তর বায়োগ্যাস চুল্লিটিকে নিজেদের হেফাজতে নিচ্ছে না। বারবার জেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সেই কারণে মানুষ বায়োগ্যাস চুল্লির পরিষেবা পাচ্ছে না। প্রশাসন যাতে পুনরায় পরিষেবা চালু করতে পারে তার জন্য আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।

এই বিষয়ে বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌড় চন্দ্র মন্ডল বলেন, বিধায়ক ও সাংসদের তহবিল থেকে তৈরি হয়েছিল এই বায়োগ্যাস চুল্লি। সাধারণ মানুষের টাকা তছনছ করেছে তারা। মানুষের কথা কেউই ভাবে না। টাকা তছনছ করাই উদ্দেশ্য। বর্তমান তৃণমূলের বিধায়ক কোনো হেলদোল দেখাচ্ছে না। আমরা চাইব বায়োগ্যাস চুল্লিটি যাতে আবার চালু করা হয়।

অন্যদিকে তৃণমূল নেত্রী তথা মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মন্ডল জানান, বায়োগ্যাস চুল্লির ব্যাপারটি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। তাড়াতাড়ি যাতে বায়োগ্যাস চুল্লির পরিষেবা চালু করা যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *