করম পূজায় মেতে উঠেছে আদিবাসী সম্প্রদায় মানুষজন জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৭ সেপ্টেম্বর : আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক করম পূজা। সেই পূজায় মেতে উঠেছে জলপাইগুড়ির আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষজন। জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে পালিত হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় এই পূজা। জলপাইগুড়ি জেলার ডুয়ার্স অঞ্চলেও পালিত হচ্ছে ধুমধাম করে করম পূজা। পূজা চলবে সারা রাত ধরে নাচ গানের মধ্য দিয়ে। জেলায় পূজা বেশি দেখা যাচ্ছে নাগরাকাটা, মালবাজার, রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি জেলার পার্শ্ববর্তী চা বাগানগুলোতে ধামসা মাদলের তালে মেতে উঠেছে লাল পাড়ের শাড়ি পড়ে কোমরে হাত লাগিয়ে গানের মধ্যে দিয়ে নাচতে ব্যস্ত আদিবাসী সম্প্রদায়ের নারীরা। আজ তাদের এই বিশেষ দিনটিতে তারা আনন্দে মেতে রয়েছে। বছরের এই একটা দিনের অপেক্ষায় তারা বসে থাকে।

মন্ডপ সাজিয়ে করম গাছের ডাল নিয়ে এসে আদিবাসী ব্রাহ্মণ দিয়ে এই পুজো হয়ে থাকে। চলে সারারাত্রি ধামসা মাদল নিয়ে নাচ ও গান। সাতদিন নিরামিষ খেয়ে এবং আজকের দিনে উপবাস থেকে এই ব্রত পালন করেন। মূলত কুমারী মেয়েদের জন্য এই পুজোটি। মেয়েরা লাল পাড় শাড়ি পড়ে পুজোর জন্য জল ভরা ও করম গাছের ডাল নিয়ে আসে, এনে মন্ডপে উপস্থাপন করে এই পূজাটি করে। মূলত কুমারী মেয়েরা তাদের ভাই বোনের মধুর সম্পর্ককে অটুট রাখতে এই পুজো করে থাকেন।

করম পুজোয় মাতলেন জলপাইগুড়ি ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা। করমপুজা কমিটির সভাপতি আনসার আলী বলেন ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ডাঙ্গালাইন , ফ‍্যাক্টরিলাইন , হুন্ডুপাড়া সহ অন্যান্য এলাকায় করম পুজোর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন রাজ‍্য সরকারের ছুটি ঘোষণার ফলে প্রতিটি চা বাগানে জাঁকজমকপূর্ণভাবে করম পুজোয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি জাতিভেদ নির্বিশেষে প্রত‍্যেকে মিলে এই পুজোয় মেতে ওঠেন। রাজ‍্য সরকারকে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

করম পুজা উৎসব মেলা জলপাইগুড়িতে। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে এবছর করম পুজোয় মাতলেন জলপাইগুড়ি বিভিন্ন চা বাগানের বাসিন্দারা। বুধবার সব বাগানের ভাসান হল রংধামালির মহারাজ ঘাটে। এই ভাসানকে কেন্দ্র করে মেলা হল। উল্লেখ্য পুজো কমিটি’র একটি নির্দিষ্ট করা স্থানে দু’টি করম ডাল এনে পুঁতে রাখা হয়, যা সন্ধ্যার পরে করম ঠাকুর বা করম গোঁলায় এবং ধরম ঠাকুর হিসেবে পূজিত হন। পুজো উপলক্ষে কুমারী মেয়েরা সারাদিন উপোষ করে সন্ধ্যার পরে থালায় ফুল, ফল সহকারে নৈবেদ্য সাজিয়ে এই স্থানে গিয়ে পূজা করেন। এরপর সারারাত ধরে পুজোকে কেন্দ্র করে সব বাগানের পাশাপাশি রায়পুর চা বাগানে নাচ গান চলল। নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোর আয়োজন করা হয়। পুজোকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক বাগান উৎসবে আনন্দে মেতে উঠলেন। এ দিন ভাসান হল। এই ভাসানকে কেন্দ্র করে ভাসান মেলার আয়োজন করা হল। আদিবাসী নৃত্য ও গানের মধ্য দিয়ে পুজো চলল।

আট চা বাগানের আদিবাসী সমাজের সভাপতি প্রধান হেমব্রম বলেন, “এবছর সব বাগানের ভাসান এক জায়গায় করা হয়। ভাসানে আদিবাসী নাচ ও বয়স্কদের সংর্বধনা দেওয়া হয়। প্রসাদ বিতরণ করা হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *